আধুনিক জীবনযাত্রার সবচেয়ে বড় স্বাস্থ্য ঝুঁকিগুলোর মধ্যে একটি হলো লিভারে অতিরিক্ত চর্বি জমা। এই অবস্থাকে ফ্যাটি লিভার বলা হয়, যা প্রাথমিকভাবে নিরীহ মনে হলেও দীর্ঘমেয়াদে লিভারের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। চিকিৎসকরা বলছেন, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ও অপরিকল্পিত জীবনযাপনের কারণে ফ্যাটি লিভারের সমস্যা দিন দিন বাড়ছে। তবে কিছু ছোট ছোট অভ্যাসের পরিবর্তন এনে এই মারাত্মক সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। এখানে তিনটি সহজ অভ্যাসের কথা বলা হলো, যা আপনার লিভারকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে।১. সুষম খাদ্যাভ্যাস
লিভার থেকে চর্বি কমানোর জন্য খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনা সবচেয়ে জরুরি। জাঙ্ক ফুড, প্রক্রিয়াজাত খাবার, অতিরিক্ত চিনিযুক্ত পানীয় এবং অ্যালকোহল গ্রহণ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করতে হবে। এর পরিবর্তে আপনার খাদ্য তালিকায় আঁশযুক্ত খাবার, যেমন— ফল, সবজি, ডাল এবং শস্য অন্তর্ভুক্ত করুন। প্রতিদিন যথেষ্ট পরিমাণে প্রোটিন (মাছ, ডিম, মুরগির মাংস) এবং স্বাস্থ্যকর চর্বি (বাদাম, অ্যাভোকাডো) গ্রহণ করা লিভারের জন্য উপকারী।
২. নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম
নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম ফ্যাটি লিভারের চিকিৎসায় অত্যন্ত কার্যকর। প্রতিদিন অন্তত ৩০-৪৫ মিনিট হালকা থেকে মাঝারি ধরনের ব্যায়াম, যেমন— দ্রুত হাঁটা, জগিং, সাঁতার কাটা বা সাইক্লিং করলে শরীরে জমে থাকা অতিরিক্ত চর্বি কমে। ব্যায়াম কেবল ওজন কমাতেই সাহায্য করে না, বরং শরীরের মেটাবলিক হার বাড়ায় এবং লিভারের কোষগুলোতে চর্বি জমার প্রক্রিয়াকে প্রতিরোধ ৩. পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান
শরীরকে হাইড্রেটেড রাখা লিভারের সুস্থতার জন্য অপরিহার্য। প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করলে শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের হয়ে যায়, যা লিভারের ওপর চাপ কমায়। অনেক সময় আমরা তৃষ্ণাকে ক্ষুধার্ত মনে করি এবং অপ্রয়োজনীয় খাবার খাই। পর্যাপ্ত পানি পান করলে এই ভুল থেকে বাঁচা যায় এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকেচিকিৎসকরা জোর দিয়ে বলছেন, ফ্যাটি লিভারের সমস্যাকে অবহেলা করা উচিত নয়। যদি আপনি এই সমস্যায় ভুগে থাকেন, তবে দ্রুত এই তিনটি অভ্যাস আপনার দৈনন্দিন জীবনে অন্তর্ভুক্ত করুন। সঠিক খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম এবং পর্যাপ্ত পানি পানের মাধ্যমে লিভারকে সুস্থ রাখা সম্ভব এবং ভবিষ্যতে বড় ধরনের জটিলতা এড়ানো যায়।
Post a Comment