পবিত্র কাবা ধ্বংসের পরিকল্পনাকারী হস্তীবাহিনীর ঘটনা

 


৫৭০ খ্রিষ্টাব্দের ঘটনা। নবীজির জন্মগ্রহণ করেছিলেন এ বছরই। সে বছর মক্কায় অবস্থিত পবিত্র কাবা ধ্বংসের পরিকল্পনা করে ইয়েমেনের গভর্নর আবরাহা বিন সাবাহ। সে ছিল আফ্রিকা সাম্রাজ্যের নাজ্জাশি বাদশাহর অধীনে থাকা গভর্নর।যখন দেখল আরববাসীরা কাবাগৃহে হজ পালনের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন দেশ থেকে লোকজন আগমন করছেন; তখন সানআয় সে একটি বিরাট গির্জা নির্মাণ করে এবং আরববাসীর হজকে সেদিকে ফিরিয়ে আনার জন্য আহবান জানায়। কিন্তু বনু কিনানাহ গোত্রের লোকজন এ সংবাদ জেনে গির্জায় প্রবেশ করে মলের প্রলেপন দিয়ে নোংরা করে ফেলে।এ ঘটনায় আবরাহা কাবাগৃহ ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে ৬০ হাজার অস্ত্রসজ্জিত সৈন্যের বিশাল বাহিনী নিয়ে মক্কার দিকে রওনা হয়। আবরাহা ইয়ামেন হতে অগ্রসর হয়ে যখন মুজদালিফা এবং মিনার মধ্যবর্তী স্থান ওয়াদিয়ে মুহাসসারে পৌঁছে তখন তার হাতিটি মাটিতে বসে পড়ে। 

 

কাবার দিকে অগ্রসর হওয়ার জন্য কোনোভাবেই উঠানো সম্ভব হয় না। অথচ উত্তর, দক্ষিণ, পূর্বদিকে যাওয়ার জন্য উঠানোর চেষ্টা করলে উঠে দৌঁড়াতে শুরু করে। এমন সময়ে মহান আল্লাহ এক ঝাঁক ছোট ছোট পাখি পাঠান। সেই পাখিগুলো ঝাঁকে ঝাঁকে পাথরের ছোট ছোট টুকরো সৈন্যদের উপর নিক্ষেপ করতে লাগল। প্রত্যেকটি পাখি তিনটি করে পাথরের টুকরো নিয়ে আসত। একটি ঠোঁটে এবং দুইটি দু-পায়ে। কঙ্করগুলোর আকার-আয়তন ছিল ছোলার মতো। কিন্তু কঙ্করগুলো যার যে অঙ্গে লাগত সেই অঙ্গ ফেটে গিয়ে সেখান দিয়ে রক্ত প্রবাহিত হয়ে সে মারা যেতপাখির কঙ্করের আঘাতে ছিন্নভিন্ন ও পদতলে পিষ্ট হয়ে অস্ত্রেসজ্জিত বাহিনী মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে লাগল। এদিকে আবরাহার উপর মহান আল্লাহ এমন এক মুসিবত দিলেন যে, তার আঙুলের জোড়া খুলে গেল এবং সানা নামক স্থানে যেতে না যেতেই সে পাখির বাচ্চার মতো হয়ে পড়ল। তারপর তার বক্ষ-বিদীর্ণ হয়ে হৃৎপিণ্ড বেরিয়ে এলো। (ইবনু হিশাম, ১/৪৫৬)

 

হস্তীবাহিনীর এ ঘটনা ছিল আগামী দিনে নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং কাবা শরিফের জন্য মহান আল্লাহর সিদ্ধান্ত ও সাহায্যের এক সুস্পষ্ট নিদর্শন।।

Countdown Timer

Post a Comment

Previous Post Next Post