আজ মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) পৃথিবীর সব জায়গায় দিন ও রাত সমান হবে। অর্থাৎ ২৪ ঘণ্টার ১২ ঘণ্টা রাত, ১২ ঘণ্টা দিন।ভাবছেন এ আর নতুন কী? প্রতিদিন তো রাত আর দিন মিলিয়ে ২৪ ঘণ্টা হয়—ঠিকই, একদিনের দৈর্ঘ্য ২৪ ঘণ্টা। কিন্তু সেই ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দিন ও রাত সবসময় সমান নয়; কখনো রাত দীর্ঘ হয়, কখনো দিন দীর্ঘ। বছরের মাত্র এ দুটি দিন—২১ মার্চ এবং ২৩ সেপ্টেম্বর, অর্থাৎ রাত ও দিনের দৈর্ঘ্য প্রায় সমান হয়। এটি সত্যিই অবাক করা বিষয়। এমনকি পৃথিবীর সব স্থানে এদিন দিন-রাত সমান থাকে। এই সময় সূর্যের কিরণ বিষুবরেখার ওপর লম্বভাবে পড়ে, যা লাতিন শব্দ ভারনাল ইকুইনক্স নামে পরিচিত। এর কারণে পৃথিবীর উভয় গোলার্ধে দিন ও রাতের দৈর্ঘ্য প্রায় সমান হয়ে যায়।বাস্তবে, সূর্যের আকার ও বায়ুমণ্ডলে আলোর প্রতিসরণের কারণে দিন ও রাত পুরোপুরি সমান হয় না। তবে এই সময় তারা প্রায় ১২ ঘণ্টার সমান থাকে। এর পর থেকে উত্তর গোলার্ধে সূর্য ধীরে ধীরে দক্ষিণ থেকে উঠে দক্ষিণে হেলে অস্ত যায়। এই সময় থেকেই গ্রীষ্মকালীন আবহাওয়ার পরিবর্তন শুরু হয়।
২২ সেপ্টেম্বর, সূর্য তার দক্ষিণ গোলার্ধের অবস্থান শেষ করে উত্তর গোলার্ধের দিকে যাত্রা শুরু করে এবং রাতের শেষের দিকে বিষুবরেখার ওপর অবস্থান নেয়। তাই পরদিন, অর্থাৎ ২৩ সেপ্টেম্বর, আবারও পৃথিবীর উভয় গোলার্ধে দিন ও রাত সমান হয়। পৃথিবী একটি উল্লম্ব অক্ষ থেকে আনুমানিক ২৩.৫ ডিগ্রি হেলে আছে। সূর্যের চারপাশে একটি পূর্ণ আবর্তন করতে পৃথিবীকে ৩৬৫ দিন ও ৬ ঘণ্টা (৩৬৫.২৫ দিন) সময় লাগে। এ কারণেই প্রতি চার বছরে একটি লিপ ইয়ার হয়।
আজ দিন-রাত সমান, কীভাবে হলো? চলুন জেনে নেওয়া গ্রীষ্মকালে সূর্য উত্তর-পূর্ব আকাশে উদিত হয় এবং উত্তর-পশ্চিম আকাশে অস্ত যায়। তখন দিন দীর্ঘ হয় আর রাত সংক্ষিপ্ত হয়। গ্রীষ্মকালে, সৌর দুপুরের সময় (দুপুর ১টা নাগাদ) সূর্য আকাশের সর্বোচ্চ এবং উত্তরতম বিন্দুতে পৌঁছায়। এর ফলে সরাসরি সৌর বিকিরণ সবচেয়ে বেশি পড়ে এবং পৃথিবীর পৃষ্ঠ আরও গরম হয়ে যায়।
অন্যদিকে, শীতকালে সূর্য দক্ষিণ-পূর্ব আকাশে উদিত হয় এবং দক্ষিণ-পশ্চিম আকাশে অস্ত যায়। তখন দিন ছোট এবং রাত দীর্ঘ হয়। শীতকালে দুপুরে সূর্য আকাশের সর্বনিম্ন এবং দক্ষিণে অবস্থান করে। এ সময় বছরের সবচেয়ে কম সরাসরি সৌর বিকিরণ পড়ে, যার ফলে পৃথিবীর পৃষ্ঠের তাপমাত্রা কম থাকে এবং পরিবেশ আরও ঠান্ডা হয়।
একটি গোলার্ধের শীতকালীন অয়নকাল হলো বছরের সবচেয়ে ছোট দিন, আর গ্রীষ্মকালীন অয়নকাল হলো বছরের দীর্ঘতম দিন। তাই ২১ জুন দিনটি বছরের সবচেয়ে লম্বা দিন হিসেবে পরিচিত। অন্যদিকে, ২১ ডিসেম্বর হলো বছরের সবচেয়ে ছোট দিন, যা শীতকালের শুরু নির্দেশ করে।
তবে মজার বিষয় হলো, পৃথিবীর কক্ষপথ সূর্যের চারপাশে সম্পূর্ণ বৃত্তাকার নয়; বরং উপবৃত্তাকার। তাই প্রকৃতপক্ষে উত্তর গোলার্ধের শীতকালে জানুয়ারিতে (পেরিহেলিয়ন) সূর্যের সবচেয়ে কাছাকাছি অবস্থান থাকে, আর উত্তর গোলার্ধের গ্রীষ্মকালে জুলাই মাসে (অ্যাফিলিয়ন) সূর্য থেকে সবচেয়ে দূরে থাকেযাক-
Post a Comment