পরিশুদ্বতা নিয়ত না থাকার কারণে আমরা খুব বিপদে পড়ে যাই। দুনিয়াতে ক্ষতিগ্রস্ত হই ও পরকালেও ক্ষতিগ্রস্ত হই। যেমন অনেকে ঘুষ দিয়ে চাকরি নেয়, চাকরি নেওয়ার পরে সেইও ঘুষ নেওয়া আরম্ভ করে। সেই ঘুষ খেতে খেতে একদরনের নেশাগ্রস্ত ঘুষখোর হয়ে যায়। সেই দুনিয়াতেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ও আখিরাতেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।তাদের ভিতরে যদি পরিশুদ্ধতা নিয়ত থাকতো তাহলে তারা এই সব অন্যায় কাজ করতো না। যাদের ভিতরে পরিশুদ্ধতা নিয়ত আছে তারা দুনিয়াতেও সফল এবং আখিরাতেও সফল। প্রিয় নবী (সা.) বলেন, লোকেরা হাশরে নিয়ত অনুযায়ী পুনরুত্থিত হবে। (সুনান ইবনে মাজাহ: ৪২২৯)
নিয়ত আরবি শব্দ। এর অর্থ ইচ্ছা, সংকল্প, মনোবাসনা। ইসলামী পরিভাষায় আল্লাহ তায়ালার আনুগত্য, সন্তুষ্টি, নৈকট্য ও তার নির্দেশ পালনার্থে কোনো কাজ করার দৃঢ় সংকল্পকে নিয়ত বলে। ইসলামে নিয়তের গুরুত্ব অপরিসীম। নিয়ত হলো ইবাদতের মূল। নিয়ত ছাড়া ইবাদত পরিশুদ্ধতা হয় না। রসুল (সা.) বলেন, প্রত্যেক কাজের ফলাফল নিয়ত অনুসারে হয়। (বুখারি: ১)
আল্লাহ বলেন, বল, প্রত্যেকে তার নিজ নিজ নিয়ত অনুসারে কাজ করে। কিন্তু তোমার রাব্ব ভাল করে জানেন, কে সর্বাপেক্ষা নির্ভুল পথে আছে। (সুরা বনি ইসরাঈল: ৮৪) ভাল মন্দ কল্যণ ও অকল্যাণ কাজ সব কিছু নিয়তের উপর নির্ভশীল। মানুষের জীবন জীবিকা, চলাপেরা কর্ম, আর্দশ নীতি ইচ্ছা সব কিছু নিয়তের উপর নির্ভনামাজ রোজা হজ যাকাতসহ যত ধরনের ইবাদত আছে, এই সব ইবাদত কবুলের জন্য পরিশুদ্ধতা নিয়ত থাকতে হবে। যদি পরিশুদ্ধতা নিয়ত না থাকে তাহলে এই সব ইবাদাত কবুল হবে না। আল্লাহ বলেন: বল (আমার এই কথা) হে আমার মু’মিন বান্দারা! তোমরা তোমাদের রাব্বাকে ভয় কর। যারা এই দুনিয়ায় কল্যাণকর কাজ করে তাদের জন্য আছে কল্যাণ।
প্রশস্ত আল্লাহর পৃথিবী, ধৈর্যশীলদেরকে অপরিমিত পুরষ্কার দেয়া হবে। বল আমি আদিষ্ট হয়েছি আল্লাহর আনুগত্য একনিষ্ঠ হয়ে তার ইবাদত করতে। আর আদিষ্ট হয়েছি, আমি যেন আত্মা-সমর্পনকারীদের অগ্রণী হই। (সুরা আয্ যুমার: ১০,১১,১২)
যারা দুনিয়াতে পরিশুদ্ধতা ইবাদত করে তাদের জন্য পরকালে রয়েছে পুরষ্কার। যারা দুনিয়াতে কল্যাণকর কাজ করে তাদের জন্য আছে মঙ্গল। দুনিয়াতে পরিশুদ্ধতা নিয়ত করে ইবাদাত করলে ইহজগত ও পরজগত উভয় জায়গায়ই কল্যাণ রয়েছে। ইবাদত কবুলের জন্য অবশ্য আল্লাহর আনুগত্যে ও পরিশুদ্ধতা নিয়ত থাকতে হবে। তাহলে আল্লাহর প্রিয় বান্দা ও তাকওয়া ভিরু হওয়া যাবে।
ব্যবসা বাণিজ্য, ব্যবসা করা নবীজীর সুন্নাত ও ইবাদত। ব্যবসা বাণিজ্যের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করা যায়। হালাল ব্যবসা করার জন্য অবশ্য পরিশুদ্ধতা নিয়ত থাকতে হবে, তাহলে ব্যবসার মাধ্যমে ইবাদত কবুল হবে। ইসলামের নির্দেশনা অনুযায়ী সততা ও আমানতদারির সঙ্গে মানুষের কল্যাণকামী হয়ে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারলে ইবাদতে পরিণত হবে। পরিশুদ্ধতা নিয়ত করে যদি হালাল ব্যবসা করে তাহলে অবশ্য পরকালে পুরষ্কার রয়েছে।
আবু সাইদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেন, সত্যবাদী ও আমানতদার ব্যবসায়ী কিয়ামতের দিন নবী, সিদ্দিক ও শহীদদের সঙ্গে থাকবে। (তিরমিজি, হাদিস নং ১২০৯) । বর্তমানে দেখা যায় ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ও ওজনে কম দেয়। অসাধু ব্যবসায়ীরা মাছ গোস্ত শাক সবজি ও রড সহ বিভিন্ন পণ্যের মধ্যে ওজনে কম দিচ্ছে ও বেশী মূল্য নিচ্ছে। কারণ তাদের নিয়ত পরিশুদ্ধতা নাই, এবং তাদের ভিতরে পরকালের ভয় নাই।
আল্লাহ বলেন, মন্দ পরিণাম তাদের জন্য যারা মাপে কম দেয়, (সূরা মুত্বাফফিফীন, আয়াত:১) এই সব অসাধু ব্যবসায়ীদের জন্য পরকালে অনেক দুঃখ কষ্ট ও অনেক যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি রয়েছে। পরকালে তাদের পরিণাম হবে খুব ভয়াবহ।
দান খয়রাত। আমাদের সমাজে দেখা যায়, মসজিদ মাদরাসা এতিমখানা ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দান খয়রাত করে অন্যদের কে দেখানোর জন্য। কেই আবার দান খয়রাত করে নিজেকে সম্মানি মানুষ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য। অনেকে দান খয়রাত করে ছবি তুলে ফেইজবুকে দেয় এবং ফেইজবুকের মাধ্যমে সবাইকে দেখায়। রাস্তায় কোন গরীব মানুষকে এক বেলা খাওয়ালে সেটাই ছবি তুলে ফেইজবুকে দেয়। মানুষদের কে দেখানো কোন ইবাদত আল্লাহর দরবারে কবুসময় নিউজ
ইবাদত কবুলের জন্য নিয়তের পরিশুদ্ধতা
পরিশুদ্বতা নিয়ত না থাকার কারণে আমরা খুব বিপদে পড়ে যাই। দুনিয়াতে ক্ষতিগ্রস্ত হই ও পরকালেও ক্ষতিগ্রস্ত হই। যেমন অনেকে ঘুষ দিয়ে চাকরি নেয়, চাকরি নেওয়ার পরে সেইও ঘুষ নেওয়া আরম্ভ করে। সেই ঘুষ খেতে খেতে একদরনের নেশাগ্রস্ত ঘুষখোর হয়ে যায়। সেই দুনিয়াতেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ও আখিরাতেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
ইসলামে নিয়তের গুরুত্ব অপরিসীম। নিয়ত হলো ইবাদতের মূল।
ইসলামে নিয়তের গুরুত্ব অপরিসীম। নিয়ত হলো ইবাদতের মূল।
মাওলানা সাইফুল ইসলাম সালেহী
৪ মিনিটে পড়ুন
তাদের ভিতরে যদি পরিশুদ্ধতা নিয়ত থাকতো তাহলে তারা এই সব অন্যায় কাজ করতো না। যাদের ভিতরে পরিশুদ্ধতা নিয়ত আছে তারা দুনিয়াতেও সফল এবং আখিরাতেও সফল। প্রিয় নবী (সা.) বলেন, লোকেরা হাশরে নিয়ত অনুযায়ী পুনরুত্থিত হবে। (সুনান ইবনে মাজাহ: ৪২২৯)
নিয়ত আরবি শব্দ। এর অর্থ ইচ্ছা, সংকল্প, মনোবাসনা। ইসলামী পরিভাষায় আল্লাহ তায়ালার আনুগত্য, সন্তুষ্টি, নৈকট্য ও তার নির্দেশ পালনার্থে কোনো কাজ করার দৃঢ় সংকল্পকে নিয়ত বলে। ইসলামে নিয়তের গুরুত্ব অপরিসীম। নিয়ত হলো ইবাদতের মূল। নিয়ত ছাড়া ইবাদত পরিশুদ্ধতা হয় না। রসুল (সা.) বলেন, প্রত্যেক কাজের ফলাফল নিয়ত অনুসারে হয়। (বুখারি: ১)
আল্লাহ বলেন, বল, প্রত্যেকে তার নিজ নিজ নিয়ত অনুসারে কাজ করে। কিন্তু তোমার রাব্ব ভাল করে জানেন, কে সর্বাপেক্ষা নির্ভুল পথে আছে। (সুরা বনি ইসরাঈল: ৮৪) ভাল মন্দ কল্যণ ও অকল্যাণ কাজ সব কিছু নিয়তের উপর নির্ভশীল। মানুষের জীবন জীবিকা, চলাপেরা কর্ম, আর্দশ নীতি ইচ্ছা সব কিছু নিয়তের উপর নির্ভশীল।
নামাজ রোজা হজ যাকাতসহ যত ধরনের ইবাদত আছে, এই সব ইবাদত কবুলের জন্য পরিশুদ্ধতা নিয়ত থাকতে হবে। যদি পরিশুদ্ধতা নিয়ত না থাকে তাহলে এই সব ইবাদাত কবুল হবে না। আল্লাহ বলেন: বল (আমার এই কথা) হে আমার মু’মিন বান্দারা! তোমরা তোমাদের রাব্বাকে ভয় কর। যারা এই দুনিয়ায় কল্যাণকর কাজ করে তাদের জন্য আছে কল্যাণ।
প্রশস্ত আল্লাহর পৃথিবী, ধৈর্যশীলদেরকে অপরিমিত পুরষ্কার দেয়া হবে। বল আমি আদিষ্ট হয়েছি আল্লাহর আনুগত্য একনিষ্ঠ হয়ে তার ইবাদত করতে। আর আদিষ্ট হয়েছি, আমি যেন আত্মা-সমর্পনকারীদের অগ্রণী হই। (সুরা আয্ যুমার: ১০,১১,১২)
যারা দুনিয়াতে পরিশুদ্ধতা ইবাদত করে তাদের জন্য পরকালে রয়েছে পুরষ্কার। যারা দুনিয়াতে কল্যাণকর কাজ করে তাদের জন্য আছে মঙ্গল। দুনিয়াতে পরিশুদ্ধতা নিয়ত করে ইবাদাত করলে ইহজগত ও পরজগত উভয় জায়গায়ই কল্যাণ রয়েছে। ইবাদত কবুলের জন্য অবশ্য আল্লাহর আনুগত্যে ও পরিশুদ্ধতা নিয়ত থাকতে হবে। তাহলে আল্লাহর প্রিয় বান্দা ও তাকওয়া ভিরু হওয়া যাবে।
ব্যবসা বাণিজ্য, ব্যবসা করা নবীজীর সুন্নাত ও ইবাদত। ব্যবসা বাণিজ্যের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করা যায়। হালাল ব্যবসা করার জন্য অবশ্য পরিশুদ্ধতা নিয়ত থাকতে হবে, তাহলে ব্যবসার মাধ্যমে ইবাদত কবুল হবে। ইসলামের নির্দেশনা অনুযায়ী সততা ও আমানতদারির সঙ্গে মানুষের কল্যাণকামী হয়ে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারলে ইবাদতে পরিণত হবে। পরিশুদ্ধতা নিয়ত করে যদি হালাল ব্যবসা করে তাহলে অবশ্য পরকালে পুরষ্কার রয়েছে।
আবু সাইদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেন, সত্যবাদী ও আমানতদার ব্যবসায়ী কিয়ামতের দিন নবী, সিদ্দিক ও শহীদদের সঙ্গে থাকবে। (তিরমিজি, হাদিস নং ১২০৯) । বর্তমানে দেখা যায় ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ও ওজনে কম দেয়। অসাধু ব্যবসায়ীরা মাছ গোস্ত শাক সবজি ও রড সহ বিভিন্ন পণ্যের মধ্যে ওজনে কম দিচ্ছে ও বেশী মূল্য নিচ্ছে। কারণ তাদের নিয়ত পরিশুদ্ধতা নাই, এবং তাদের ভিতরে পরকালের ভয় নাই।
আল্লাহ বলেন, মন্দ পরিণাম তাদের জন্য যারা মাপে কম দেয়, (সূরা মুত্বাফফিফীন, আয়াত:১) এই সব অসাধু ব্যবসায়ীদের জন্য পরকালে অনেক দুঃখ কষ্ট ও অনেক যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি রয়েছে। পরকালে তাদের পরিণাম হবে খুব ভয়াবহ।
দান খয়রাত। আমাদের সমাজে দেখা যায়, মসজিদ মাদরাসা এতিমখানা ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দান খয়রাত করে অন্যদের কে দেখানোর জন্য। কেই আবার দান খয়রাত করে নিজেকে সম্মানি মানুষ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য। অনেকে দান খয়রাত করে ছবি তুলে ফেইজবুকে দেয় এবং ফেইজবুকের মাধ্যমে সবাইকে দেখায়। রাস্তায় কোন গরীব মানুষকে এক বেলা খাওয়ালে সেটাই ছবি তুলে ফেইজবুকে দেয়। মানুষদের কে দেখানো কোন ইবাদত আল্লাহর দরবারে কবুল হবে না।
প্রিয় নবীজী (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি মানুষকে শুনানোর জন্য কাজ করে আল্লাহ তার বদলে তাকে (কিয়ামতের দিন) শুনিয়ে দিবেন। আর যে লোক দেখানোর জন্য কাজ করে আল্লাহ তার বদলে তাকে (কিয়ামতের দিন) দেখিয়ে দিবেন। (বুখারি: ৬৪৯৯)
দান খয়রাত করা হলো ইবাদত, আর এই ইবাদত কবুলের জন্য অবশ্য পরিশুদ্ধতা নিয়ত থাকতে হবে। আল্লাহকে দেখানো ও তাকওয়া অর্জনের জন্য যদি দান খয়রাত করা হয় তাহলে অবশ্য এই ইবাদাত কবুল হবে। দানকারীদের নিয়ত যদি আল্লাহ ও রাসূলের জন্য হয় তাহলে আখিরাতে রয়েছে পুরষ্কার। আল্লাহ বলেন: যারা রাতে ও দিনে, গোপনে ও প্রকাশ্যে নিজেদের ধন-সম্পদ ব্যয় করে তাদের পুরষ্কার রয়েছে, তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা দুঃখিত হবেনা। (সুরা আল বাকারা: ২৭৪)
লেখক: গবেষকল হবে না।শীল।
Post a Comment