কিডনি আমাদের শরীরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোর মধ্যে একটি। এটি রক্ত থেকে বর্জ্য পদার্থ, অতিরিক্ত পানি ও টক্সিন ফিল্টার করে আমাদের স্বাস্থ্যের ভারসাম্য রাখে। তবে কিডনি ঠিকমতো কাজ না করলে নানা স্বাস্থ্যঝুঁকি দেখা দেয়, যা প্রাথমিকভাবে চোখে পড়ে না। তাই প্রাথমিক লক্ষণগুলো চিহ্নিত করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।কিডনির সমস্যা হলে শরীরে দেখা দেয় এমন লক্ষণগুলো:
১. ক্লান্তি ও দুর্বলতা
কিডনি ঠিকমতো কাজ না করলে রক্তে বর্জ্য জমা হয়। এছাড়াও কিডনি হরমোন (এরিথ্রোপয়েটিন) তৈরি করে, যা লোহিত রক্তকণিকা উৎপাদনে সাহায্য করে। রক্তাল্পতার কারণে শরীর অক্সিজেনের অভাবে ক্লান্তি ও দুর্বলতা অনুভব করতে পারে।
২. প্রস্রাবের পরিবর্তন
ঘন ঘন প্রস্রাব, বিশেষ করে রাতে, ফেনাযুক্ত বা গাঢ় রঙের প্রস্রাব, রক্তমিশ্রিত প্রস্রাব বা হঠাৎ প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া—সবই কিডনির সমস্যার প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে।
৩. ফোলাভাব (এডিমা)
কিডনি যথাযথভাবে তরল অপসারণ না করলে পা, গোড়ালি, হাত বা মুখে ফোলাভাব দেখা দেয়। দিনের শেষে ফোলাভাব আরও বেড়ে. ত্বকে চুলকানি ও জ্বালাপোড়া
কিডনি খনিজের ভারসাম্য ঠিক রাখে। কার্যকারিতা কমে গেলে ফসফরাসের মাত্রা বেড়ে গিয়ে ত্বক শুষ্ক ও চুলকানি হতে পারে।
৫. মুখে ধাতব স্বাদ ও খাবারে অরুচি
টক্সিন জমার কারণে মুখে ধাতব স্বাদ বা দুর্গন্ধ দেখা দিতে পারে। কখনও কখনও প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবারের প্রতি অরুচি জন্মা. শ্বাসকষ্ট ও ক্লান্তি
ফুসফুসে অতিরিক্ত তরল জমা হলে শ্বাসকষ্ট দেখা দিতে পারে। রক্তাল্পতার কারণে হালকা পরিশ্রমেও ক্লান্তি অনুভূত হয়।
৭. বমি বমি ভাব ও ক্ষুধাহ্রাস
বর্জ্য পদার্থ জমার ফলে বমি বমি ভাব, বমি, ক্ষুধাহ্রাস এবং অপ্রত্যাশিত ওজন হ্রাস হতে পারে।
৮. স্মৃতিশক্তি ও মনোযোগের সমস্যা
টক্সিন সঠিকভাবে ফিল্টার না হলে মস্তিষ্কের কার্যকারিতা প্রভাবিত হয়। মনোযোগ হারানো, স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া এবং বিভ্রান্তি (‘ব্রেন ফগ’) দেখা দিতে পারে।
সতর্কবার্তা
যদি এই লক্ষণগুলোর কোনোটি লক্ষ্য করেন, দ্রুত কিডনি পরীক্ষা এবং ডাক্তারের পরামর্শ নিন। প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত ও চিকিৎসা করলেই কিডনির সমস্যার গুরুতর অবস্থা এড়ানো সম্ভব।
Post a Comment