পায়ে ঝিঁঝিঁ ধরা কি জটিল রোগের উপসর্গ?

 


অনেক সময় পা ও হাতের ওপর দীর্ঘক্ষণ চাপ পড়লে কিংবা একই ভঙ্গিতে বসে বা শুয়ে থাকলে সাময়িক যে অসাড় অনুভূতি তৈরি হয়। সেটিকেই সাধারণত ঝিঁঝিঁ ধরা বলা হয়। ঝিঁঝিঁ ধরার বিষয়টি নিয়ে সবাই অবগত। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায়, একে বলে ‘টেম্পোরারি প্যারেসথেশিয়া’।


সাধারণত শুরু হয় পাঁচ-দশ মিনিট পর। এ সময় হাত বা পায়ের সংশ্লিষ্ট অংশটি অসাড় হয়ে আসে। মনে হয় কেউ যেন অসংখ্য সুচ দিয়ে একসঙ্গে ওই অংশে খোঁচা দিচ্ছে। তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই অসাড়তা এবং খোঁচা লাগার মতো অস্বস্তিকর অনুভূতি চলে যাকেন হয় এমনটি?


মানবদেহের সর্বত্র অসংখ্য স্নায়ু রয়েছে। এ স্নায়ুগুলো মস্তিষ্ক ও দেহের অন্যান্য অংশের মধ্যে তথ্য আদান-প্রদান করে। বসা বা শোয়ার সময় এ স্নায়ুর কোনো একটিতে চাপ পড়তে পারে। স্নায়ুতে চাপ পড়ার ফলে শরীরের ওই অংশ থেকে তথ্য মস্তিষ্কে ঠিকভাবে পৌঁছাতে পারে না।


ফলে শরীরের ওই অংশে রক্ত চলাচল ব্যহত হয়। ফলে ঝিঁঝিঁ ধরতে পারে। এ পরিস্থিতি থেকে চাপ অপসারিত হলে, একসঙ্গে প্রচুর পরিমাণ রক্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে প্রবাহিত হয়। পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণ তথ্য মস্তিষ্কে প্রবাহিত হতে শুরু করে। ফলে সুচ ফোটার অনুভূতি তৈরি হয়।


কোন শারীরিক সমস্যার কারণে এ ঝিঁঝিঁ সমস্যা হয়


প্রথমত দীর্ঘ দিন ধরে ডায়াবিটিসে ভুগলে তার প্রভাব পড়ে স্নায়ুর ওপর। স্নায়ুর এ সমস্যার কারণেই ডায়াবেটিস রোগীর মাঝে মধ্যেই পায়ে ঝিঁঝিঁ ধরে। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থার শেষের পর্যায়ে যখন শিশুর ওজন বাড়তে শুরু করে, তখন জরায়ুর চাপে পায়ের স্নায়ুগুলোর ওপর চাপ পড়তে শুরু করে। সেই সময় হবু মায়েদের ঝিঁঝির সমস্যা হয়।


এ ছাড়া ভিটামিন বি ১ ও বি ১২-এর প্রভাবে সারা শরীরে স্নায়ুগুলো ঠিকমতো কাজ করে। কিন্তু শরীরে এ ভিটামিনগুলোর অভাব দেখা দিলে ঝিঁঝিঁ ধরার সমস্যা বেড়ে যায়।


হাইপোথাইরয়েডিজমের ক্ষেত্রে অর্থাৎ যখন শরীরের থাইরয়েডগ্রন্থি ঠিকমতো হরমোন ক্ষরণ করতে পারে না, তখনো হাতে-পায়ে ঝিঁঝিঁ ধরে। আবার অতিরিক্ত মদপানের ফলে অ্যালকোহলিক নিউরোপ্যাথির সমস্যা শুরু হয় কারও কারও। এ রোগে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এই রোগীদেরও ঘন ঘন হা-পায়ে ঝিঁঝিঁ ধরে।য়।

Countdown Timer

Post a Comment

Previous Post Next Post