বারবার খাবার গরম করা নিয়ে যা বলছেন পুষ্টিবিদ

 


ঘরে রান্না করা খাবার ফ্রিজে রাখা হলো। পরে খেতে ইচ্ছা করল— তাই বারবার গরম করে খেলেন। কিন্তু কখনো কি ভেবেছেন, এতে শরীর ঠিকঠাক পুষ্টি পাচ্ছে তো?অনেকেরই ধারণা, একবারের বেশি খাবার গরম করলে পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায়। কেউ কেউ তো এটাকে একেবারেই নিষেধ করেন! কিন্তু আসলেই কি বিষয়টা এতটা ভয় পাওয়ার মতো? পুষ্টিবিদ মীনাক্ষী মজুমদার এ বিষয়ে জানিয়েছেন গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য। চলুন জেনে নিই— খাবার গরম করা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর কিনা, আর হলে কোন পদ্ধতিতে ক্ষতি কম হয়।একাধিকবার গরম করলে কী হয়


খাবার রান্নার পর ফ্রিজে রেখে আবার গরম করলেই কিছুটা পুষ্টিগুণ কমে যেতে পারে। বিশেষ করে ভিটামিন বি ও সি জাতীয় উপাদানগুলো তাপে সংবেদনশীল, তাই বারবার গরম করলে এগুলো কমে যায়।



আর যদি একই খাবার বারবার ঠান্ডা-গরম হয়, তখন শুধু পুষ্টি নয়, ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের ঝুঁকিও থাকে। এতে খাবার নষ্ট হয়ে যেতে পারে, যা খেলে পেটের সমস্যা বা হজমে গোলমাল হতে পারে।



খাবার কীভাবে সংরক্ষণ করলে ক্ষতি কম হয়?


পুষ্টিবিদদের মতে, যদি একসঙ্গে বেশি রান্না করতেই হয়, তাহলে কিছু নিয়ম মেনে চললে ক্ষতি কম হয় :



- একবার রান্না করা খাবার ছোট ছোট পাত্রে ভাগ করে ফ্রিজে রাখুন



- প্রতিবার খাওয়ার সময় শুধু প্রয়োজনীয় অংশটাই বের করে গরম করুন



- একই খাবার একাধিকবার গরম করবেন না



- ফ্রিজ থেকে বের করার পর দ্রুত গরম করে খেয়ে ফেলুন— বেউদাহরণ : ৩ দিনের জন্য মাছ রান্না করলে তা এক পাত্রে না রেখে তিনটি আলাদা পাত্রে সংরক্ষণ করুন। প্রতিদিন একটি করে বের করুন, তাতে খাবারের স্বাদ ও গুণ দুই-ই বজায় থাকবে।



বাসি খাবার না খাওয়াই ভালো


প্রতিদিন ফ্রেশ ও টাটকা খাবার খাওয়া সবচেয়ে ভালো। ফ্রিজে রাখা পুরোনো খাবার বা বারবার গরম করা খাবার থেকে হজমের সমস্যা, গ্যাস, এমনকি ফুড পয়জনিং পর্যন্ত হতে পারে।



তাই যদি সম্ভব হয়, অল্প করে প্রতিদিন রান্না করে খাওয়াই সবচেয়ে নিরাপদ।



মাইক্রোওয়েভে খাবার গরম করা কি ক্ষতিকর?


অনেকের ধারণা, মাইক্রোওয়েভে গরম করলে খাবার বিষাক্ত হয়ে যায়।



কিন্তু পুষ্টিবিদদের মতে, এটা একদমই সত্য নয়। যদি সঠিক উপায়ে ব্যবহার করা হয়, তাহলে মাইক্রোওয়েভে গরম করাও নিরাপদ। তবে খাবার ভালোভাবে গরম হচ্ছে কিনা, সেটি সবচেয়ে ভালো পদ্ধতি হচ্ছে— চুলায় কড়াইতে বা সসপ্যানে গরম করে নেওয়া। এতে খাবার সমানভাবে গরম হয় এবং অনেকক্ষেত্রে গুণগত মানও ভালো থাকে।



খাবার খাওয়ার সময় নিয়েও সচেতন হোন


শুধু কীভাবে খাচ্ছেন তা নয়, কখন খাচ্ছেন তাও গুরুত্বপূর্ণ।



- সময়মতো খাবার খেলে হজম ভালো হয়



- গ্যাস, অম্বল বা অ্যাসিডিটির সমস্যা কমে



- খাবারের পুষ্টিগুণও ঠিকঠাক কাজে আসে



এছাড়া একবারে বেশি খাবার না খেয়ে কম করে বারবার খামনে রাখবেন, সতেজ খাবারেই সেরা পুষ্টি। এক খাবার বারবার গরম করলে কিছু পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়। তবে সংরক্ষণ ও গরম করার নিয়ম মানলে ক্ষতি অনেকটাই কমে।



যতোটা সম্ভব ফ্রেশ ও হালকা রান্না করে খাওয়ার অভ্যাস গড়ুন এবং সময়মতো, পরিমাণমতো ও সচেতনভাবে খাবার খান। খাবারই আপনার শক্তি—তাই পুষ্টিগুণ নষ্ট করে নয়, সেটা ঠিকভাবে গ্রহণ করাটাই বুদ্ধিমানের কাজ।



সূত্র : এই সময় অনলাইনওয়াও ভালো অভ্যাস।নিশ্চিত হতে হবে।শিক্ষণ বাইরে রাখবেন না

Countdown Timer

Post a Comment

Previous Post Next Post