প্রশ্ন
জামাতে নামাজ আদায় করার সময় কারো অজু ছুটে গেলে নিয়ত ছেড়ে দিয়ে রুকু-সিজদায় ইমামের অনুসরণ করা হয় তাহলে তা জায়েজ হবে কি? একটি কিতাবে তা জায়েজ বলা হয়েছে। কিন্তু আমাদের মসজিদের ইমাম সাহেব বলছেন, এটা জায়েজ হবে না। সঠিক মাসআলাটি জানতে চাই।
-আবু সালেহ মুহাম্মাদ মুসা, নতুন হাসপাতাল রোড, নেত্রকোনা
উত্তর
জামাতে নামাজ পড়া অবস্থায় কোনো ব্যক্তির অজু ছুটে গেলে সম্ভব হলে তৎক্ষণাৎ অজুর জন্য বের হয়ে যাবেন।
ইমামের নামাজ শেষ হওয়ার অপেক্ষায় বসে থাকবেন না। সাহাবা-তাবেয়ীদের একাধিক আছার দ্বারা এ বিষয়টি প্রমাণিত।
যেমন আমর ইবনুল হারেস থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নামাজরত ব্যক্তির নাক দিয়ে রক্ত বের হলে কী করণীয় এ সম্পর্কে উমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) বলেন, সে অজুর জন্য বের হয়ে যাবে এবং অজু করে আসবে। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদিস : ৫৯৫০)
সালমান ফারেসী (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, তোমাদের মধ্যে কারো যদি নামাজে অজু ছুটে যায় তাহলে সে যেন বের হয়ে মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদিস : ৫৯৫৪)
আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.)-এর নাক থেকে নামাজ অবস্থায় রক্ত বের হলে তিনি ফিরে গিয়ে অজু করে আসতেন। (মুআত্তা মালেক, হাদিস : ৫০)
ইবরাহীম নাখায়ী (রাহ.) বলেছেন, নামাজ অবস্থায় যে ব্যক্তির নাক দিয়ে রক্ত বের হবে অথবা অজু ছুটে যাবে সে (মসজিদ থেকে) বের হয়ে যাবে এবং অজু করে আসবে। (কিতাবুল আছার ১/১৬২)
সাহাবা-তাবেয়ীন থেকে এ ধরনের আরো বর্ণনা রয়েছে। এ সব বর্ণনা থেকে এ কথা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয় যে, নামাজে অজু ছুটে গেলে অজুর জন্য বের হয়ে যাবে।
অবশ্য মসজিদে মুসল্লির সংখ্যা বেশি হওয়ার কারণে কাতারের মাঝখান থেকে বের হওয়া সম্ভব না হলে সেক্ষেত্রে নামাজ শেষ হওয়ার অপেক্ষায় বসে থাকতে পারবে। তবে এক্ষেত্রেও অজু ছুটে যাওয়ার পর লজ্জা, সংকোচ বা অন্য কোনো কারণে বিনা অজুতে ইমামের সঙ্গে রুকু সিজদা করতে থাকা ঠিক হবে না। কোনো নির্ভরযোগ্য কিতাবে এমনটি করার কথা পাওয়া যায়নি। প্রশ্নোক্ত কিতাবের ওই বক্তব্য ঠিক নয়।
উৎস: আলকাউসার, ডিসেম্বর ২০১৪।অজু করে আসে।
Post a Comment