সন্তান নেওয়ার পরিকল্পনা করছেন এমন অনেক দম্পতিকে প্রায়ই একটি সাধারণ প্রশ্ন ভাবায়: স্বামী-স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ এক হলে কি সন্তানের কোনো সমস্যা হতে পারে? চিকিৎসাবিজ্ঞান অনুযায়ী, রক্তের গ্রুপ এক হওয়ায় সাধারণত কোনো সমস্যা হয় না। তবে Rh ফ্যাক্টরের ভিন্নতা থাকলে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি।
রক্তের গ্রুপ এবং Rh ফ্যাক্টরের গুরুত্ব
রক্তের গ্রুপ প্রধানত দুটি ভাগে বিভক্ত: ABO গ্রুপিং (A, B, AB, O) এবং Rh ফ্যাক্টর (Rh পজিটিভ (+) বা Rh নেগেটিভ (-))। এই Rh ফ্যাক্টরটিই গর্ভধারণের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
স্বামী-স্ত্রীর Rh ফ্যাক্টর যদি একই হয়:
* উভয়ের Rh পজিটিভ (+): সাধারণত কোনো সমস্যা হয় না, কারণ সন্তানের রক্তও পজিটিভ হবে।
* উভয়ের Rh নেগেটিভ (-): কোনো ঝুঁকি নেই, কারণ সন্তানের রক্তও নেগেটিভ হবে।
স্বামী-স্ত্রীর Rh ফ্যাক্টর যদি ভিন্ন হয়:
* স্বামী নেগেটিভ (-), স্ত্রী পজিটিভ (+): এই ক্ষেত্রে কোনো ঝুঁকি নেই।
* স্বামী পজিটিভ (+), স্ত্রী নেগেটিভ (-): এই পরিস্থিতিতে সতর্ক থাকা প্রয়োজন। যদি গর্ভের সন্তান Rh পজিটিভ হয়, তাহলে মায়ের শরীরে Rh অ্যান্টিবডি তৈরি হতে পারে। এই অ্যান্টিবডি পরবর্তী গর্ভধারণের সময় শিশুর জন্য সমস্যা তৈরি করতে পারে।
Rh অ্যান্টিবডি তৈরি হলে কী হয়?
যদি মায়ের শরীরে Rh অ্যান্টিবডি তৈরি হয়, তাহলে তা দ্বিতীয় বা পরবর্তী সন্তানের রক্তকে 'বিদেশি' হিসেবে চিহ্নিত করে আক্রমণ করতে পারে। এর ফলে শিশুর শরীরে জন্ডিস, রক্তশূন্যতা, অথবা হাইড্রোফস ফিটালিস (শিশুর শরীরে পানি জমা) এর মতো জটিলতা দেখা দিতে পারে। সময়মতো চিকিৎসা না হলে শিশুর গর্ভেই মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে।
প্রতিরোধ ও করণীয়
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ঝুঁকি এড়ানোর জন্য গর্ভধারণের আগেই স্বামী-স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ জানা খুবই জরুরি। যদি স্ত্রীর রক্ত Rh নেগেটিভ এবং স্বামীর রক্ত Rh পজিটিভ হয়, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। গর্ভাবস্থায় Rh অ্যান্টিবডি টেস্ট করে ঝুঁকি আছে কিনা তা নিশ্চিত হতে হবে। যদি অ্যান্টিবডি তৈরি না হয়, তবে:
* গর্ভাবস্থার ২৮ সপ্তাহে একটি টিকা নিতে হবে।
* সন্তান জন্মের ৭২ ঘণ্টার মসঠিক সময়ে চিকিৎসকের পরামর্শ এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে Rh ফ্যাক্টর সংক্রান্ত জটিলতা এড়ানো এবং সুস্থ সন্তান জন্মদান নিশ্চিত করা সম্ভব।ধ্যে আরেকটি টিকা নেওয়া প্রয়োজন।
Post a Comment