এই ৭টি লক্ষণে বুঝবেন আপনার কিডনি নষ্ট হচ্ছে

 কিডনি আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ। এটি রক্ত পরিশোধন, বনিজ্য বর্জ্য অপসারণ এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় vital role পালন করে। যখন কিডনি ঠিকমতো কাজ করা বন্ধ করে দেয়, তখন শরীর কিছু সংকেত পাঠায় যা দেখে রোগ শনাক্ত করা সম্ভব। প্রাথমিক পর্যায়ে কিডনি রোগ ধরা পড়লে চিকিৎসা করে জীবন বাঁচানো সহজ হয়।



বিশ্বব্যাপী ১০ শতাংশ মানুষ দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগে ভুগছেন। প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষ সঠিক চিকিৎসার অভাবে মারা যান। তাই কিডনির এই লক্ষণগুলো সম্পর্কে সচেতন থাকা জরুরি।


১. প্রস্রাবের পরিবর্তন


কিডনি বিকল হওয়ার প্রাথমিক লক্ষণগুলির মধ্যে অন্যতম হলো প্রস্রাবের অভ্যাসে পরিবর্তন। এর মধ্যে রয়েছে:


* রাতে বারবার প্রস্রাব হওয়া।



* প্রস্রাব ফেনাযুক্ত, গাঢ় বা রক্তাক্ত হওয়া।



* কোনো কারণ ছাড়াই প্রস্রাবের পরিমাণ কমে বা বেড়ে যাওয়া।


* প্রস্রাব করার সময় ব্যথা বা অস্বস্তি অনুভব করা।


২. ত্বক শুষ্ক ও চুলকানিযুক্ত হওয়া


যখন কিডনি শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ ও অতিরিক্ত খনিজ পদার্থ বের করতে পারে না, তখন ত্বকে কিছু লক্ষণ প্রকাশ পায়:


* ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক ও চুলকানিযুক্ত হয়ে যায়, যা ময়েশ্চারাইজার দিয়েও কমে না।



* শরীরে টক্সিন জমার কারণে ফুসকুড়ি বা জ্বালাভাব দেখা দিতে পারে।



* এই সমস্যা সাধারণত ক্যালসিয়াম ও ফসফরাসের ভারসাম্যহীনতার কারণে হয়।


৩. শরীর ফুলে যাওয়া


কিডনির কার্যকারিতা কমে গেলে শরীর থেকে অতিরিক্ত তরল বের হতে পারে না, যার ফলে হাত, পা, গোড়ালি, মুখ ও চোখের চারপাশে ফোলাভাব দেখা যায়। এই ফোলাভাবকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় 'এডিমা' বলা হয় এবং এটি কিডনি রোগের একটি গুরুতর লক্ষণ।


৪. রুচি ও ক্ষুধায় পরিবর্তন


রক্তে বর্জ্য পদার্থ জমা হওয়ার কারণে মুখে স্বাদ ও ক্ষুধার পরিবর্তন হয়। এর মধ্যে সাধারণ লক্ষণগুলো হলো:


* মুখে সবসময় ধাতব স্বাদ থাকা।


* ক্ষুধা কমে যাওয়া বা বিনা কারণে ওজন কমে যাওয়া।


* বিশেষ করে সকালে বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।


৫. ঘুমের সমস্যা


যদি কিডনি সঠিকভাবে টক্সিন ফিল্টার করতে না পারে, তাহলে বর্জ্য পদার্থ রক্তে জমা হয় এবং ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়। এর ফলে ঘুমিয়ে পড়া বা গভীর ঘুম হওয়ার সমস্যা হতে পারে। অনেকের 'রেস্টলেস লেগ সিন্ড্রোম' বা স্লিপ অ্যাপনিয়াও দেখা দিতে পারে।


৬. শ্বাসকষ্ট


বিনা পরিশ্রমেও যদি শ্বাসকষ্ট হয়, তাহলে তা কিডনি সমস্যার কারণে হতে পারে। কিডনি দুর্বল হলে ফুসফুসে অতিরিক্ত তরল জমা হতে পারে, যার ফলে শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। এছাড়াও, কিডনি রোগ রক্তস্বল্পতার কারণ হতে পারে, যা শরীরে অক্সিজেনের পরিমাণ কমিয়ে দেয়।


৭. সবসময় ক্লান্ত থাকা


পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়ার পরও যদি আপনি সব সময় ক্লান্ত বোধ করেন, তাহলে তা কিডনি সমস্যার লক্ষণ হতে পারে। সুস্থ কিডনি 'এরিথ্রোপয়েটিন' নামক একটি হরমোন তৈরি করে, যা লোহিত রক্তকণিকা উৎপাদনে সাহায্য করে। কিডনি দুর্বল হলে এই হরমোনের উৎপাদন কমে যায়, যার ফলে রক্তস্বল্পতা ও ক্লান্তি দেখা দেয়।

Countdown Timer

Post a Comment

Previous Post Next Post