আমাদের দেশের গ্রামাঞ্চলের খাল-বিল ও পুকুর-ডোবা থেকে হারিয়ে গেছে বহু প্রজাতির দেশি মাছ। এসব মাছ যেমন পুষ্টিকর তেমনই সুস্বাদু। কিন্তু বর্তমানে বিলুপ্ত হতে যাওয়া এসব মাছ বাজারে সামান্য পরিমাণে উঠলেও তা চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। সে রকমই একটি মাছ হলো বাইম মাছ।একসময় গ্রামাঞ্চলের পুকুর-ডোবা বা খাল-বিলে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যেত এই মাছ। কিন্তু ক্রমেই এই মাছ বিভিন্ন কারণে বংশবিস্তার করতে না পারায় প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে। ফলে বাজারে চড়া দামে বিক্রি হয়।
ফ্যাট কম, সুস্বাদু ও প্রোটিনের ভাণ্ডার এই বাইম মাকিন্তু এত গুণাগুণ সত্ত্বেও ক্রমেই যেন বিলুপ্তির পথে এই মাছ। আর তাতেই চড়চড়িয়ে দাম চড়ছে। তাও আবার সময় মতো যায় না খুব একটা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বাইম মাছ মূলত এক ধরনের জিওল মাছ।
এই মাছকে ইংরেজিতে মাড ফিশও বলা হয়ে থাকে। আবার অনেকে এই মাছটিকে পাকাল মাছ বলেও চিনে থাকেন। এই মাছ পুষ্টিগুণে ভরপুর। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই, ভিটামিন ডি, ফসফরাস, আয়োডিন, সেলেনিয়াম জাতীয় উপাদাবাইম মাছ মূলত গ্রাম বাংলার পুকুর ঘাটেই পাকের মধ্যে সহজেই বেড়ে ওঠে।কিন্তু বর্তমানে মিষ্টি পানিতে রুই, কাতলা, মৃগেলের মত পোনা মাছগুলোর উৎপাদন বাড়ানোর জন্য বিজ্ঞানসম্মতভাবে মাছের চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। আর সেই চাষ করতে গিয়ে বহু ক্ষেত্রেই পুকুর কিংবা জলাশয়ের পানি সেচে পুরোপুরি ফেলা হচ্ছে।
এ ছাড়া পুকুর থেকে অবাঞ্ছিত মাছ, পোকা সরিয়ে ফেলতে যথেচ্ছ ভাবে ব্লিচিং, মহুয়া খৈল প্রয়োগ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য চাষিরা। এর ফলে প্রায় পুরো পুকুর জলাশয়ে খুব সহজেই বেড়ে ওঠা বাইম প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে পড়ছে। আর তাতেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মৎস্যপ্রেমী থেকে শুরু করে মৎস্য গবেষকরা।
শাল বাইম মাছের পুষ্টিগুণ
প্রোটিন : বাইম প্রোটিনের একটি ভালো উৎস। প্রতিদিনের প্রোটিন চাহিদা পূরণ করতে এটি সহায়ক হতে পারে। প্রোটিন আমাদের শরীরের কোষ গঠন, মেরামত ও শারীরিক বিকাশের জন্য অপরিহার্য।
ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড : বাইম মাছ ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড সমৃদ্ধ, যা হৃদরোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। এটি রক্তের চাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং কোলেস্টেরল লেভেল ঠিভিটামিন ডি : বাইম মাছ ভিটামিন ডি এর একটি ভালো উৎস, যা হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি ক্যালসিয়াম শোষণে সহায়তা করে এবং হাড়ের শক্তি বৃদ্ধি করে।
আয়রন : এই মাছ আয়রনের একটি ভালো উৎস, যা রক্তে হিমোগ্লোবিন তৈরি করতে সহায়তা করে। এটি রক্তশূন্যতা প্রতিরোধে কার্যকর। এ ছাড়া এতে রয়েছে পর্যাপ্ত জিঙ্ক, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে এবং শরীরের ক্ষত দ্রুত সারাতে সাহায্য করে।
লো ক্যালরি : বাইম মাছের ক্যালরি মাত্রা কম, যা ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। যারা ওজন কমানোর চিন্তা করছেন, তাদের জন্য এটি একটি ভালো বিকল্প।
হৃদরোগের ঝুঁকি কমানো : শাল বাইম মাছের ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। এটি রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।
প্রোটিনের চাহিদা পূরণ : এই মাছ প্রোটিনের একটি চমৎকার উৎস। প্রোটিন শরীরের কোষ মেরামত, বৃদ্ধি এবং শক্তি উৎপাদনে সাহায্য করে। যারা মাংস থেকে প্রোটিন পেতে চান না, তাদের জন্য শাল বাইম মাছ একটি ভালোভিটামিন এ : চোখের দৃষ্টি ভালো রাখতে বাইম মাছ অনেক উপকারী। এতে রয়েছে ভিটামিন এ, যা রাতকানা ও চোখের অন্যান্য সমস্যা প্রতিরোধে সাহায্য করে। বিকল্প।ক রাখে।ন।ছ।
Post a Comment