ঘুম থেকে উঠেই ঘাড়ে ব্যথার পেছনে ঘুমের ভঙ্গি, বালিশের ধরন থেকে শুরু করে কিছু শারীরিক সমস্যা পর্যন্ত নানা কারণ থাকতে পারেহেলথলাইনের এক প্রতিবেদনে চিকিৎসকরা এ বিষয়ে কথা বলেছেন। তারা ঘুমের পর ঘাড়ের ব্যথার সম্ভাব্য কারণ, ঘরোয়া প্রতিকার ও প্রতিরোধের উপায় জানিয়েছেন।ঘুমের ভঙ্গি: যারা পেটের ওপর ভর দিয়ে ঘুমান, তাদের ঘাড় ঘণ্টার পর ঘণ্টা একদিকে মোচড়ানো অবস্থায় থাকে। এতে ঘাড়ের পেশিতে টান পড়ে ও সকালে ঘাড় শক্ত বা ব্যথা অনুভূত হয়।
বালিশের ধরন: বালিশ মাথা ও ঘাড়কে সঠিকভাবে সাপোর্ট না দিলে ঘাড়ের পেশিতে চাপ পড়ে। ফেদার বা মেমোরি-ফোম বালিশ ঘাড় ও মেরুদণ্ডকে সঠিক ভঙ্গিতে রাখতে সাহায্য করেহঠাৎ নড়াচড়া: ঘুমের মধ্যে হঠাৎ নড়াচড়া, যেমন হঠাৎ উঠে বসা বা স্বপ্নে হাত-পা ছোড়া, ঘাড়ের পেশিতে টান ধরাতে পারে।
পুরোনো চোট: হুইপল্যাশ বা খেলাধুলার চোটের পর অনেক সময় ব্যথা সঙ্গে সঙ্গে বোঝা যায় না, ঘুমের পর সকালে স্পষ্ট হয়অন্যান্য কারণ: সারাদিনের খারাপ ভঙ্গি, দীর্ঘ সময় কম্পিউটারের সামনে বসে থাকা, অস্টিওআর্থরাইটিস বা ডিস্ক স্লিপের মতো সমস্যাও ঘাড়ে ব্যথা ডেকে আনতে পারে।
ঘরোয়া প্রতিকাব্যথা শুরুর প্রথম দিকে ২০ মিনিট করে বরফ বা ঠান্ডা প্যাক লাগান, এটি প্রদাহ কমাতে সাহায্য করবে।
একদিনের বেশি ব্যথা থাকলে ২০ মিনিট করে গরম সেঁক নিন, পেশি শিথিল হবে। প্রয়োজনে আইবুপ্রোফেন, ন্যাপ্রক্সেন বা অ্যাসিটামিনোফেনের মতো ওভার-দ্য-কাউন্টার ব্যথানাশক খেতে পারেন। হালকা ব্যায়াম বা হাঁটা-যোগাভ্যাস চালিয়ে যান। সম্পূর্ণ স্থির না থেকে রক্তসঞ্চালন সচল রাখা জরুরি।
প্রতিরোধের উপায়
উপুড় হয়ে না ঘুমিয়ে পাশ ফিরে কিংবা চিত হয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করুন।
পাশে ঘুমালে হাঁটুর মাঝখানে বালিশ রাখুন, এতে ঘাড় ও মেরুদণ্ড সোজা থাকে।
ঘাড়ের নিচে বালিশের উচ্চতা মাথার সমান না হলে ঘাড়ে টান পড়তে পারে এ বিষয় খেয়াল রাখুন।
ফেদার বা মেমোরি ফোমের বালিশ ব্যবহার করুন এবং বছরে একবার পরিবর্তন করুন।
শক্ত বা খুব মোটা বালিশ এড়িমাঝারি-ফার্ম ম্যাট্রেস ব্যবহার করুন, পুরোনো ও মাঝখানে দেবে যাওয়া ম্যাট্রেস ঘাড়-ব্যথা বাড়াতে পারে।
সারাদিন সঠিক ভঙ্গিতে বসুন ও হাঁটুন, বিশেষ করে ডেস্কে কাজের সময় কাঁধ ঝুঁকিয়ে বা ঘাড় বেশি নীচু করে বসবেন না।
মোবাইল চোখের সমান উচ্চতায় ধরে ব্যবহার করুন, কানে ফোন আটকে ঘাড় কাত করবেন না।
নিয়মিত ব্যায়াম করুন, এটি ঘাড়ের পেশি শক্ত রাখবে।
কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন: কয়েক দিন ঘরোয়া যত্নের পরও ব্যথা না কমলে বা বেড়ে গেলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। নিচের কোনো লক্ষণ থাকলে দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসাজ্বর, তীব্র মাথাব্যথা
বুকে ব্যথা বা শ্বাসকষ্ট
ঘাড়ে গুটি বা লিম্ফনোড ফুলে যাওয়া
হাত-পা অবশ বা ঝিনঝিন অনুভূতি
Post a Comment