কিডনি নষ্ট করে দিচ্ছে আপনার অজান্তে করা ৬টি অভ্যাস!

 


আমাদের শরীরের ভেতরে নীরবে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে কিডনি। রক্ত থেকে বর্জ্য ছেঁকে ফেলা, শরীরে পানির ভারসাম্য রাখা, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা, এমনকি রক্ত তৈরির জন্যও এ অঙ্গের ভূমিকা অমূল্য। কিন্তু অনেকেই না জেনেই প্রতিদিন এমন কিছু করছেন, যা ধীরে ধীরে কিডনিকে দুর্বল করে দিচ্ছে। একবার কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হলে তা ফেরানো প্রায় অসম্ভব। তাই সচেতন না হলে দেরিতে বুঝতে পেরে হাত কেবল পস্তানোই থাকবে।চিনি বেশি খেলেই বিপদ

অতিরিক্ত মিষ্টি খাবার বা কোমল পানীয় শুধু ডায়াবেটিসই বাড়ায় না, কিডনির ওপরও ভয়াবহ চাপ ফেলে। শরীরের বাড়তি শর্করা ছেঁকে বের করতে গিয়ে কিডনির সূক্ষ্ম রক্তনালী ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর ফল ধীরে ধীরে কার্যক্ষমতা কমে যায়। তাই যতটা সম্ভব চিনিযুক্ত পানীয়, কেক-পেস্ট্রি বা প্রসেসড খাবার এড়িয়ে চলুন।


পানি না খেলেই বিপর্যয়

যথেষ্ট পানি ছাড়া কিডনি তার স্বাভাবিক কাজ করতে পারে না। শরীর পানিশূন্য হয়ে গেলে টক্সিন বের হওয়ার প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। এতে বাড়তে পারে ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন কিংবা কিডনিতে পাথরের ঝুঁকি। সারাদিন অল্প অল্প করে পানি পান করলেই কিডনি অনেকটা স্বস্তি পায়।


লবণের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার

খাবারে লবণ একটু বেশি হলে ক্ষতি তেমন বোঝা যায় না, কিন্তু বছরের পর বছর ধরে এর প্রভাব ভয়ঙ্কর হয়। উচ্চ রক্তচাপ তৈরি করে লবণ সরাসরি কিডনির রক্তনালী ক্ষতিগ্রস্ত করে। বাজারের প্যাকেটজাত বা ফাস্টফুডে লুকানো লবণের পরিমাণও কম নয়। তাই সতর্ক না হলে অজান্তেই কিডনিকে ঝুঁকিতে ফেলছেন।


উচ্চ রক্তচাপকে পাত্তা না দেওয়া

উচ্চ রক্তচাপ অনেক সময় কোনো উপসর্গ ছাড়াই শরীরে নীরবে কাজ করে যায়। অথচ এটি কিডনি নষ্ট করার অন্যতম প্রধান কারণ। নিয়মিত রক্তচাপ মাপা, মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করা, ব্যায়াম আর প্রয়োজনে ওষুধ খাওয়াই কিডনিকে বাঁচিয়ে রাখার বড় উপায়।


ঘুম কম হলে ক্ষতি বেশি

কিডনিরও একটি প্রাকৃতিক বিশ্রামের ছন্দ আছে। পর্যাপ্ত ঘুম না হলে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়। এতে শরীরে প্রদাহ বাড়ে, ইনসুলিন প্রতিরোধ গড়ে ওঠে এবং রক্তচাপ বেড়ে যায়। প্রতিদিন অন্তত ৭ থেকে ৯ ঘণ্টা ভালো ঘুম কিডনিকে নতুন শক্তি জোগায়।


ব্যায়াম এড়িয়ে চলা

দিনের পর দিন বসে থাকা জীবনযাপন কিডনির জন্য বিষের মতো। নিয়মিত হাঁটা, হালকা দৌড় বা সাঁতার কিডনিকে সক্রিয় রাখে এবং সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।


কিডনির ক্ষতি একবার শুরু হলে আর ফিরিয়ে আনা যায় না। তাই দেরি না করে আজ থেকেই জীবনযাত্রায় ছোট ছোট পরিবর্তন আনুন। খাবারে সচেতন হোন, পর্যাপ্ত পানি পান করুন, নিয়মিত ঘুমান আর ব্যায়াম করুন। এই কয়েকটি অভ্যাসই আপনাকে দীর্ঘদিন কিডনি জটিলতা থেকে রক্ষা করবে।

Countdown Timer

Post a Comment

Previous Post Next Post