ব্রেকআপের পর এক তীব্র শূন্যতা ও কষ্ট অনুভব করা খুব স্বাভাবিক। অনেকে এই অনুভূতিকে সত্যিকারের ভালোবাসার বিচ্ছেদজনিত কষ্ট মনে করেন। কিন্তু মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, ব্রেকআপের পর আমরা যে তীব্র যন্ত্রণা অনুভব করি, তার একটি বড় অংশই ভালোবাসার চেয়ে আসক্তি বা নেশা-র সঙ্গে বেশি সম্পর্কিত।ভালোবাসা কী?
মনোবিজ্ঞানীদের মতে, সত্যিকারের ভালোবাসা হলো একে অপরের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা, বিশ্বাস এবং দায়িত্ববোধের উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠা একটি সুস্থ সম্পর্ক। এখানে থাকে পারস্পরিক বোঝাপড়া, সহানুভূতি এবং একে অপরের উন্নতির জন্য কাজ করার মানসিকতা। ভালোবাসা কোনো ব্যক্তিকে নিজের জীবনের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করে না; বরং দুজন মানুষ একসাথে বেড়ে ওঠার সুযোগ পায়। যখন সত্যিকারের ভালোবাসা শেষ হয়, তখন কষ্ট হয় ঠিকই, কিন্তু এর সঙ্গে কোনো শারীরিক বা মানসিক নির্ভরতা থাকে নাআসক্তি বা নেশা কী?
অন্যদিকে, আসক্তি বা নেশা হলো কোনো ব্যক্তির ওপর শারীরিক বা মানসিক নির্ভরতা। ব্রেকআপের পর যে তীব্র কষ্ট বা Withdrawal Symptoms দেখা দেয়, তা অনেকটা ড্রাগ বা অ্যালকোহলের আসক্তি ছাড়ার মতো।
ডোপামিন-এর ভূমিকা: যখন আমরা প্রিয় মানুষের সঙ্গে থাকি, তখন আমাদের মস্তিষ্কে ডোপামিন নামক হরমোন নিঃসৃত হয়, যা আমাদের আনন্দ ও তৃপ্তি দেয়। ব্রেকআপের পর এই ডোপামিনের সরবরাহ হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়, ফলে মস্তিষ্ক এর ঘাটতি অনুভব করে। এর ফলস্বরূপ তীব্র মানসিক যন্ত্রণা, অস্থিরতা এবং বিষণ্ণতা দেখা দেয়।
পরিচিতির অভাব: দীর্ঘদিনের সম্পর্কের পর আমরা সেই সম্পর্কের প্যাটার্নে অভ্যস্ত হয়ে যাই। ব্রেকআপের পর সেই পরিচিত রুটিন ভেঙে যায়, যা আমাদের মধ্যে এক ধরনের নিরাপত্তাহীনতা এবং শূন্যতা তৈরি করে। এই শূন্যতা পূরণের জন্য আমরা বারবার তার কাছে ফিরে যেতে চাই, যা ভালোবাসার চেয়ে আসক্তির লহতাশা: ব্রেকআপের পর আমরা হতাশ হয়ে পড়ি, কারণ আমাদের পরিকল্পনা, স্বপ্ন এবং ভবিষ্যৎ ভেঙে যায়। এই হতাশা থেকেই সম্পর্কটি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করি, যা আসক্তিকে আরও বাড়িয়ে তোলে।
সমাধান কী?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই আসক্তি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য প্রথমেই প্রয়োজন সচেতনতা। মেনে নিতে হবে যে সম্পর্কটি শেষ হয়েছে। এরপর নতুন অভ্যাস গড়ে তোলা, বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানো এবং নিজেকে শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ রাখার চেষ্টা করা উচিত।ক্ষণ।।
Post a Comment