নবীজি (সা.) আমাদের ৭ কাজে আদেশ ও ৭ কাজে নিষেধ করেছেন

 

নিচের হাদিসটিতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুসলিম সমাজের পারস্পরিক দায়িত্ব ও সামাজিক আচরণবিধি স্পষ্ট করেছেন এবং সঙ্গে কিছু জাগতিক ভোগবিলাস থেকে দূরে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।


حَدَّثَنِي مُعَاوِيَةُ بْنُ سُوَيْدِ، بْنِ مُقَرِّنٍ قَالَ دَخَلْتُ عَلَى الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ فَسَمِعْتُهُ يَقُولُ أَمَرَنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِسَبْعٍ وَنَهَانَا عَنْ سَبْعٍ أَمَرَنَا بِعِيَادَةِ الْمَرِيضِ وَاتِّبَاعِ الْجَنَازَةِ وَتَشْمِيتِ الْعَاطِسِ وَإِبْرَارِ الْقَسَمِ أَوِ الْمُقْسِمِ وَنَصْرِ الْمَظْلُومِ وَإِجَابَةِ الدَّاعِي وَإِفْشَاءِ السَّلاَمِ ‏.‏ وَنَهَانَا عَنْ خَوَاتِيمَ أَوْ عَنْ تَخَتُّمٍ بِالذَّهَبِ وَعَنْ شُرْبٍ بِالْفِضَّةِ وَعَنِ الْمَيَاثِرِ وَعَنِ الْقَسِّيِّ وَعَنْ لُبْسِ الْحَرِيرِ وَالإِسْتَبْرَقِ وَالدِّيبَاجِ ‏.‏


অনুবাদ 


মুয়াবিয়াহ ইবনে সুওয়াইদ ইবনে মুকাররিন (রহ.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি বারা ইবনে আযিব (রা.) এর নিকটে গমন করেছিলাম। সে সময় আমি তাকে বলতে শুনেছি যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের সাতটি জিনিসের আদেশ করেছেন এবং সাতটি জিনিস হতে বারণ করেছেন।


তিনি আমাদের (আদেশ করা ৭টি বিষয় হচ্ছে)-


১. অসুস্থ ব্যক্তির খোজ-খবর নেয়া,


২. জানাযায় শরীক হওয়া,


৩. হাঁচিদাতার উত্তর দেয়া,


৪. শপথ পূরণ করা কিংবা বলেছেন শপথকারীর শপথ পূরণ করা,


৫. নির্যাতিতের সাহায্য করা,


৬. দাওয়াতকারীর ডাকে (দাওয়াতে) সাড়া দেয়া


৭. এবং সালামের প্রসার করার নির্দেশ দিয়েছেন


এবং তিনি আমাদেরকে (নিষেধ করা ৭টি বিষয় হচ্ছে)


১. সোনার আংটি পরিধান করা,


২. রূপার বাসনে পান করা,


৩. মায়াসির (এক প্রকার তুলতুলে রেশমী কাপড়)


৪. কাস্‌সী (রেশম সংমিশ্রিত এক রকম মিসরী কাপড়) পরিধান করা


৫. মিহি রেশমী কাপড়,


৬. মোটা রেশমী কাপড়


৭. খাটি রেশমী কাপড় ব্যবহার করতে বারণ করেছেন।


-(মুসলিম, হাদিস : ২০৬৬)


হাদিসটিতে দুটি দিক তুলে ধরা হয়েছে—


(ক) করণীয় সাতটি কাজ: এগুলো মূলত মুসলমানদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব, সামাজিক দায়বদ্ধতা ও মানবিক সহানুভূতি দৃঢ় করার বিষয়। যেমন—রোগীর খোঁজখবর নেওয়া, সালামের জবাব দেওয়া, হাঁচিদাতাকে দোয়া করা ইত্যাদি—এসব ছোট ছোট আমল সমাজকে পরস্পরের নিকটবর্তী করে এবং হৃদয়ের মধ্যে ভালোবাসা সৃষ্টি করে। একইভাবে জানাযায় অংশগ্রহণ, দাওয়াত গ্রহণ, মাজআর কসমের প্রতি সম্মান প্রদর্শন মানুষের পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাসকে দৃঢ় করে।

(খ) বর্জনীয় সাতটি জিনিস: এগুলো মূলত অহংকার, বিলাসিতা ও অপচয় থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা। স্বর্ণ, রৌপ্য, রেশম ইত্যাদি বিলাসপণ্য ব্যবহার পুরুষদের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে, কারণ এগুলো একধরনের অহংকার, আত্মগর্ব এবং বৈষয়িক প্রতিযোগিতা জন্ম দেয়। 


হাদিস থেকে আমাদের শিক্ষা


১. সামাজিক দায়িত্ব পালন ঈমানের অঙ্গ – মুসলমানরা একে অপরের জন্য দোয়া, খোঁজখবর ও সাহায্যে এগিয়ে যা২. মৃত্যুর স্মরণ ও আখিরাতের প্রস্তুতি – জানাযায় অংশগ্রহণ মৃত্যুর কথা স্মরণ করায়, যা ঈমানকে দৃঢ় করে।

৩. দ্বীনি ভ্রাতৃত্বের প্রকাশ – সালামের জবাব দেওয়া, দাওয়াত গ্রহণ করা ও হাঁচিদাতাকে দোয়া করা ভ্রাতৃত্ব ও ভালোবাসা বৃদ্ধি করে।

৪. মাজলুমের পক্ষে দাঁড়ানো ফরজ – অন্যায়কারীর বিরোধিতা ও অত্যাচারিতকে সহযোগিতা করা ইসলামের মৌলিক নীতি।

৫. আড়ম্বর থেকে বাঁচা ইসলামী বৈশিষ্ট্য – পুরুষদের জন্য স্বর্ণ ও রেশম বর্জন ইসলামের সরলতা ও নম্রতার শিক্ষা দেয়।

৬. অহংকার ও বিলাসিতা ধ্বংস ডেকে আনে – তাই মুসলমানদের উচিত সহজ-সরল জীবনধারা অবলম্বন করা।বে।লুমকে সাহায্য করা সমাজকে একত্রিত করে রাখে।

Countdown Timer

Post a Comment

Previous Post Next Post