নীলফামারীর ডোমারে পারিবারিক বিরোধকে কেন্দ্র করে মামা শ্বশুরের কামড়ে ডান হাতে গুরুতর আহত হয়েছেন এক গৃহবধূ। গুরুতর আহত অবস্থায় বুধবার রাতে ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন স্বজনেরা।বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ওই গৃহবধূর ভাই বাদী হয়ে ওই গৃহবধূর মামা শশুড় হরিনচড়া শালমারা এলাকার নুরল হক এর ছেলে মোঃ নুর হোসেন সহ ৬ জনের বিরুদ্ধে ডোমার থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।জানা গেছে, ডোমার উপজেলার হরিনচড়া ইউনিয়নের শালমারা গ্রামের মৃত ওলিয়ার রহমানের ছেলে শরীফুল ইসলাম (২৮) ও পূর্ব হরিনচড়া গ্রামের ওসমান গনির মেয়ে মোছাঃ জান্নাতুন (২২) বিয়ে সম্পন্ন হয় পারিবারিক আলোচনার মাধ্যমে। কিন্তু দুই পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে হলেও বিয়ের কয়েকমাস পর থেকেই শাশুড়ি কর্তৃক শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু হয় বলে অভিযোগ করে জান্নাতুন।
জান্নাতুন আরও বলেন, আমার শ্বশুর মারা যাওয়ার পর থেকেই পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমার শাশুড়ি আমাকে ছাড় দেন না। কয়েকদিন যাবত আমার শাশুড়ি আমায় নিয়ে এলাকার অনেকে কাছে মিথ্যা অপবাদ ছড়ায়। এটা নিয়ে আমার শাশুড়ির সাথে ঝগড়া লাগে। এক পর্যায়ে আমার শাশুড়ি আমার মামা শশুর সহ তার আত্মীয়দের কল দিয়ে ডাকেন। আমার স্বামী কাজের সুবাদে বাইরে থাকার কারনে আমার মামা শ্বশুর সহ কয়েকজন আত্মীয় এসে আমাকে আক্রমণ করে বাড়িঘর ভাংচুর চালায় এবং আমার ডান হাতে কামড় দিয়ে গুরুতর আহত করে। আমি সেখানে অসুস্থ হয়ে পড়লে আমার ভাই আমাকে হাসপাতাল ভর্তি করে বলে জানতে পারি।
জান্নাতুনের স্বামী শরীফুল ইসলাম বলেন, আমার স্ত্রীকে এর আগেও আমার মামা কয়েকবার মারধর করেছিলো। লজ্জার কারণে কাউকে কিছু বলিনি। মায়ের বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ সত্য বলে জানান শরীফুল। এমন সমস্যা নিয়ে এর আগেও কয়েকবার গ্রাম্য শালিস মিমাংসা হয়েছে কিন্তু তেমন কোনো কাজ হজান্নাতুনের ভাই সুজন ইসলাম বলেন, বোনের ফোন পেয়ে দ্রুত ছুটে যায়। গিয়ে দেখি সে আহত অবস্থায় পড়ে আছে। আমার উপস্থিতি দেখে অভিযুক্তরা আমাকে হুমকি দেন। পরে আমি উপস্থিত লোকদের সহযোগিতায় আমার বোনকে হাসপাতালে নেই এবং আজ থানায় অভিযোগ দায়ের করি। সাংসারিক সমস্যা থাকায় আমার বোন দুলাভাই দীর্ঘদিন নিজ বাড়ি ছেড়ে ভাড়া বাসায় ছিলেন তারপরেও সমস্যা শেষ হয়না।
আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে জান্নাতুনের শাশুড়ি মোছা. ফুলবানু(৪৫)। বউয়ের হাতে কামড়ে দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আমার বউ আমার উপর হাত তুলেছে এজন্য আমাদের মধ্যে হাতাহাতি হয়েছে। তবে কোনো পুরুষ তাকে মারেনি। স্বামীর মৃত্যু পর থেকে বউ ঠিক মতো খবর নেন না জান্নাতুন, এসব নিয়ে কথা বলার কারনে প্রায় বউ শাশুড়ির জগড়া লাগে বলে জানান ফুলবানুর স্বজনেরা। তবে এ বিষয়ে জান্নাতুনের মামা শ্বশুর নুর হোসেনের সাথে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তিনি ফোন রিসিভ করেনি।
হরিনচড়া ইউপি চেয়ারম্যান রাসেল রানা জানান, বউ শাশুড়ি মারামারি করে দুই পক্ষ চিকিৎসাধীন রয়েছে। তারা সুস্থ হলে এটা নিয়ে সমাধানের চেষ্টা করা হবে। ওই পরিবারের সমস্যা নিয়ে ইতিপূর্বেও সমাধান করার চেষ্টা করা হয়েছিলো। তবে স্থায়ী সমাধান হয়নি বলে তিনি জানান।
অভিযোগের বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে বলে জানান তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো. কাওছার আলী।য়নি।
Post a Comment