ঈমান আনার পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিধান নামাজ। পাঁচটির মধ্যে এটি ইসলামের দ্বিতীয় স্তম্ভ। নামাজ শব্দটি ফারসি ভাষা, আর আরবিতে একে বলা হয় সালাত, দৈনিক সময়মতো যা আদায় করতে হয়। প্রত্যেক প্রাপ্ত বয়স্ক, জ্ঞানসম্পন্ন নারী ও পুরুষের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া ফরজ। মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে ৮২ বার নামাজের কথা বলেছেন।
পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘পাপীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে -- তোমরা কেন জাহান্নামে যাচ্ছ?’ তারা বলবে, ‘আমরা নামাজি ছিলাম না, মিসকিনদের আহার করাতাম না, অন্যের দোষ তালাশকারীদের সঙ্গে বিতর্কে লিপ্ত ছিলাম; যার কারণে আজ আমরা জাহান্নামে যাচ্ছি।’ (সুরা মুদ্দাসসির, আয়াত ৪০-৪৫)
আরেক আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন,
মুমিনরা সফলকাম, যারা তাদের নামাজে নম্রতা ও ভয়ভীতির সঙ্গে দাঁড়ায়। (সুরা মুমিনুন, আয়াত ১-২)।
নামাজ পূর্ণ হওয়ার জন্য রোকনগুলো ঠিকভাবে আদায় করা আবশ্যক। হজরত উবাদাহ ইবনুস সামিত (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে, নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মহান আল্লাহ বান্দার জন্য ফরজ করেছেন। যে ব্যক্তি এ নামাজের জন্য ভালোভাবে অজু করবে, ঠিক সময়ে আদায় করবে এবং রুকু ও খুশু পূর্ণরূপে করবে, তার জন্য আল্লাহর ওয়াদা রয়েছে যে, তিনি তাকে ক্ষমা করে দেবেন। আর যে তা না করবে, তার জন্য আল্লাহর ওয়াদা নেই। ইচ্ছা করলে তিনি ক্ষমা করে দিতে পারেন, আর ইচ্ছা করলে শাস্তিও দিতে পারেন। (মেশকাত: ৫৭০)
অনেকে জানতে চান, সুন্নত না পড়ে শুধু ফরজ আদায় করলে কি নামাজ শুদ্ধ হবে? শুধু ফরজ নামাজ আদায় করলে ওয়াক্তের নামাজের দায়িত্ব আদায় হয়ে যায়। ফরজ নামাজ শুদ্ধ হয়ে যায়; তবে ত্রুটি থেকে যায়। সুন্নত নামাজগুলো ফরজের পরিপূরক।
বিখ্যাত সাহাবি হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে, ‘আমি নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম নামাজের হিসেব নেয়া হবে। নামাজ ভালোভাবে আদায় হয়ে থাকলে সে সফল হবে ও মুক্তি পাবে। নামাজ যথাযথ আদায় না হয়ে থাকলে ক্ষতিগ্রস্ত ও ধ্বংস হবে।’ যদি ফরজ নামাজে কিছু কম হয়ে থাকে, তবে মহান আল্লাহ ফেরেশতাদের বলবেন, ‘আমার বান্দার কোনো নফল নামাজ আছে কিনা, থাকলে তা দ্বারা ফরজ পূর্ণ করে দেয়া হবে। এরপর অন্যান্য আমলের ব্যাপারেও একই অবস্থা হবে।’ (নাসায়ি: ৪৬৬; ইবনু মাজাহ: ১৪২৫)
Post a Comment