জন্ডিসের ৫ বড় কারণ, উপসর্গ দেখে চিনে নিন

 


জন্ডিসের উপসর্গগুলো অনেক সময়ই বোঝা যায় না। সাধারণ অসুস্থতা ভেবে মানুষ এগুলো এড়িয়ে যায়। যার ফল হতে পারে ভয়ংকর। তাই এই রোগ নিয়ে আরো বেশি সতর্ক হওয়া উচিত।জন্ডিস কী, কেন হয়, এসব কিছু জানলে তবেই সঠিকভাবে সাবধানতা অবলম্বন করা সম্ভব। চলুন, তাহলে জেনে নেওয়া যাক—

জন্ডিস কী


জন্ডিস প্রধানত ত্বক ও চোখের হলুদাভ হওয়ার মাধ্যমে চিহ্নিত হয়। রক্তে বিলিরুবিনের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণে এটি ঘটে থাকে। এটি সাধারণত নিজে কোনো রোগ নয়, বরং অন্য কোনো স্বাস্থ্য সমস্যার লক্ষণ হিসেবে দেখা দেজন্ডিস লিভার, রক্তকণিকার ক্ষয় বা কিছু ওষুধের প্রতিক্রিয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার ইঙ্গিত দিতে পারে।

জন্ডিসের সাধারণ লক্ষণসমূহ


জ্বর, ক্লান্তি, বমি ভাব

উরু বা পেটের ওপরের অংশে ব্যথা

গাঢ় রঙের মূত্র

ত্বক ও চোখের সাদা অংশ হলুদাভজন্ডিসের ৫ প্রধান কারণ


লিভারের সংক্রমণ : এই ভাইরাসজনিত সংক্রমণ, বিশেষ করে হেপাটাইটিস এ, সরাসরি লিভারের কার্যকারিতাকে প্রভাবিত করে এবং বিলিরুবিন প্রক্রিয়াজাতকরণ ব্যাহত করে। লিভারের প্রদাহের কারণে বিলিরুবিনের মাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং চোখ-ত্বকে হলুদাভ হয়ে যায়। এ ছাড়া লিভারের অন্যান্য সমস্যা যেমন সিরোসিস বা অটোইমিউন রোগও জন্ডিসের কারণ হতে পারে।


রেড ব্লাড সেল দ্রুত ধ্বংস : সংক্রমণ, অটোইমিউন রোগ, বা ওষুধের প্রতিক্রিয়ার কারণে যখন রেড ব্লাড সেল স্বাভাবিকের চেয়ে দ্রুত ধ্বংস হয়, তখন বিলিরুবিনের মাত্রা বেড়ে যায় এবং লিভার তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না, ফলে জন্ডিস দেখা দেয়।


বাইল ডাক্টে অবরোধ : পিত্তনালীর ব্লকেজ, যেমন স্টোন, টিউমার বা প্রদাহ, পিত্তের স্বাভাবিক প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করে এবং রক্তে বিলিরুবিন জমে জন্ডিসের সৃষ্টিঅ্যালকোহলজনিত লিভার ক্ষতি : দীর্ঘমেয়াদি ও অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবন লিভারের কোষকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং সিরোসিসের মতো দীর্ঘস্থায়ী লিভার রোগের কারণ হতে পারে। ফলে লিভারের বিলিরুবিন প্রক্রিয়াজাত করার ক্ষমতা কমে যায়।


ওষুধ, টক্সিন ও অন্যান্য কারণ : কিছু ওষুধ যেমন বেশি মাত্রায় প্যারাসিটামল, স্টেরয়েড বা ক্ষতিকারক রাসায়নিকের সংস্পর্শ লিভার ক্ষতি করতে পারেএ ছাড়া জেনেটিক সমস্যা, গর্ভাবস্থায় হরমোনের পরিবর্তন এবং কিছু ধরনের ক্যান্সারও বিলিরুবিন মেটাবোলিজমে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।

জন্ডিস শুধু চোখ বা ত্বকের হলদেটে হয়ে যাওয়ার সমস্যা নয়, এটি শরীরের অভ্যন্তরীণ স্বাস্থ্য সম্পর্কে একটি গুরুত্বপূর্ণ সতর্কবার্তা। এটি লিভারের কার্যকারিতা, রক্তের উপাদান ও শরীরের মেটাবলিজমের সঙ্গে সম্পর্কিত নানা জটিলতার ইঙ্গিত দিতে পারে। তাই জন্ডিস দেখা দিলে তা অবহেলা করা উচিত নয়নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও চিকিৎসকের পরামর্শ এই অবস্থার প্রাথমিক শনাক্তকরণ ও চিকিৎসায় অত্যন্ত সহায়ক। সুষম খাদ্যাভ্যাস, পর্যাপ্ত পানি গ্রহণ, বিশ্রাম ও স্বাস্থ্যকর জীবনধারা বজায় রাখার মাধ্যমে লিভারের স্বাস্থ্যকে সুরক্ষিত রাখা সম্ভব। সচেতনতা, দ্রুত পদক্ষেপ ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা গ্রহণই সুস্থ জীবনযাপনের মূল চাবিকাঠি।


সূত্র : আজকাল।। হয়। হওয়ায়।

Countdown Timer

Post a Comment

Previous Post Next Post