শরীর যখন স্বাভাবিক ছন্দ হারায়, তখন নানা উপায়ে তার বার্তা দেয়। ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে যাওয়া তেমনই একটি অবস্থা, যা প্রথমে খুব বেশি জোরে জানান দেয় না। বরং ছোট ছোট সংকেত ফেলে যায়। হঠাৎ কোনো অস্বস্তি, অকারণ ব্যথা কিংবা দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি এসবই হতে পারে লুকিয়ে থাকা সমস্যার ইঙ্গিত। যদিও রক্ত পরীক্ষা ছাড়া সঠিক মাত্রা জানা সম্ভব নয়, তবে শরীরের দেওয়া আগাম সংকেত চিনতে পারলে গাউট কিংবা কিডনির জটিলতার মতো মারাত্মক সমস্যাকে অনেকটাই ঠেকানো যায়।রাতে হঠাৎ বড় আঙুলে তীব্র ব্যথা
ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে যাওয়ার সবচেয়ে প্রচলিত লক্ষণ হলো পায়ের বড় আঙুলে হঠাৎ ব্যথা শুরু হওয়া, যা প্রায়শই রাতেই দেখা দেয়। ব্যথা এতটাই তীক্ষ্ণ হয় যে ঘুম ভেঙে যেতে পারে। চিকিৎসা গবেষণায় দেখা গেছে, শরীরের তুলনায় বড় আঙুল অপেক্ষাকৃত ঠান্ডা থাকে, ফলে সেখানে ইউরিক অ্যাসিডের স্ফটিক জমে গাউটের আক্রমণ শুরু হয়।
গোড়ালি ও হাঁটুতে ফোলা ও উষ্ণতা
ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে গেলে শরীরের প্রতিরোধ ব্যবস্থা ইউরেট স্ফটিককে আঘাত হিসেবে ধরে নেয়। এর ফলে ফোলা, উষ্ণতা এবং কখনো কখনো লালচে ভাব দেখা দেয় বিশেষ করে গোড়ালি ও হাঁটুর মতো ওজন-সহনশীল জয়েন্টগুলোতে। আঘাত বা মচকানোর কারণে হওয়া ফোলার সঙ্গে এর পার্থক্য হলো এটি চক্রাকারে আসে ও যায়, যা গাউটজনিত সমস্যার গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ।
বারবার কিডনিতে পাথর হওয়া
উচ্চ ইউরিক অ্যাসিড শুধু জয়েন্টেই প্রভাব ফেলে না, কিডনির উপরও চাপ সৃষ্টি করে। বারবার কিডনিতে ছোট পাথর হওয়া, যা তীব্র ব্যথার সঙ্গে কোমর বা পেটের পাশ দিয়ে বেরিয়ে আসে, হতে পারে হাইপারইউরিসেমিয়ার লক্ষণ। চিকিৎসকদের মতে, কিডনির প্রায় ১০ থেকে ১৫ শতাংশ পাথর ইউরিক অ্যাসিডের কারণে তৈরি হয়।
ব্যথাযুক্ত জয়েন্টে লালচে চকচকে ত্বক
আরেকটি স্পষ্ট সংকেত হলো ব্যথাযুক্ত জয়েন্টে লালচে ও চকচকে ত্বক দেখা দেওয়া। ইউরিক অ্যাসিডের স্ফটিক থেকে সৃষ্ট প্রদাহের কারণে এ অবস্থা তৈরি হয়। আক্রান্ত জায়গার ত্বক টানটান, উজ্জ্বল ও উষ্ণ অনুভূত হয়, যা সাধারণ আঘাত বা মচকানোর চেয়ে অনেক বেশি বিরক্তিকর দেখায়।
সতর্কতা জরুরি
ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে যাওয়া শুরুতে খুব সহজে ধরা পড়ে না। তবে শরীরের এই সূক্ষ্ম সংকেতগুলো অবহেলা করলে তা গাউট, কিডনি পাথর বা আরও জটিল রোগে রূপ নিতে পারে। তাই পরীক্ষা না করলেও যদি এসব উপসর্গ ঘন ঘন দেখা দেয়, তবে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। সচেতনতা এবং সময়মতো পদক্ষেপই পারে ভবিষ্যতের বড় ঝুঁকি থেকে আপনাদাঁতের ব্যথা শুধু মুখের সমস্যা নয়, হতে পারে স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাকের প্রাথমিক সংকেত!
Post a Comment