জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে, চলছে গণনা। ফলাফল পেতে শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের সদস্য সচিব অধ্যাপক রশিদুল আলম।দীর্ঘ ৩৩ বছর পর বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠিত হয়েছে ১০ম জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচন। একই দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১টি আবাসিক হলের সংসদ নির্বাচনও হয়েছে। এ নির্বাচন শুধু নেতৃত্ব বাছাই নয়-এটি যেন শিক্ষার্থীদের অধিকার, স্বপ্ন আর ভবিষ্যতের প্রতিচ্ছবি হয়ে ওঠে, সেটিই প্রত্যাশা শিক্ষার্থীদের।
ভোট দেয়ার সুযোগ পেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। ভোটারদের উপস্থিতি ছিল বেশ আশাব্যঞ্জক। শিক্ষার্থীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়েছেন।
কোন হলে কত ভোট পড়লো?
ছাত্র হল
আল বেরুনী হল: ২১১ জন ভোটারের বিপরীতে ভোট পড়েছে ১২৫টি।
আফম কামাল উদ্দিন হল: ৩৪১ জন ভোটারের বিপরীতে ভোট পড়েছে ২১৬টি।
মীর মোশারফ হোসেন হল: ৪৬৪ জন ভোটারের বিপরীতে ভোট পড়েছে ৩১০টি।
শহীদ সালাম বরকত হল: ২৯৯ জন ভোটারের বিপরীতে ভোট পড়েছে ২২৪টি।
মওলানা ভাসানী-অনার্স হল: ৫১৪ জন ভোটারের বিপরীতে ভোট পড়েছে ৩৮৪টি।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হল: ৩৫০ জন ভোটারের বিপরীতে ভোট পড়েছে ২৬১টি।
১০ নম্বর ছাত্র হল-অনার্স হল: ৫৪১ জন ভোটারের বিপরীতে ভোট পড়েছে ৩৮১টি।
শহীদ রফিক জব্বার হল: ৬৫৬ জন ভোটারের বিপরীতে ভোট পড়েছে ৪৭০টি।
২১ নম্বর ছাত্র হল-অনার্স হল: ৭৩৫ জন ভোটারের বিপরীতে ভোট পড়েছে ৫৬৪টি।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হল: ৯৯১ জন ভোটারের বিপরীতে ভোট পড়েছে ৮১০টি।
শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ হল: ৯৪৭ জন ভোটারের বিপরীছাত্রী হল
জাহানারা ইমাম হল: ৩৬৭ জন ভোটারের বিপরীতে ভোট পড়েছে ২৪৭টি।
নওয়াব ফয়জুন্নেসা হল: ২৮০ জন ভোটারের বিপরীতে ভোট পড়েছে ১৩৭টি।
প্রীতিলতা হল: ৩৯৯ জন ভোটারের বিপরীতে ভোট পড়েছে ২৪৬টি।
বেগম খালেদা জিয়া হল: ৪০৯ জন ভোটারের বিপরীতে ভোট পড়েছে ২৪৯টি।
বেগম সুফিয়া কামাল হল: ৪৫৬ জন ভোটারের বিপরীতে ভোট পড়েছে ২৪৬টি।
১৩ নম্বর ছাত্রীহল: ৫৩২ জন ভোটারের বিপরীতে ভোট পড়েছে ২৭৯টি।
১৫ নম্বর ছাত্রীহল: ৫৭১ জন ভোটারের বিপরীতে ভোট পড়েছে ৩৩৮টি।
রোকেয়া হল: ৯৫৫ জন ভোটারের বিপরীতে ভোট পড়েছে ৬৮০টি।
ফজিলাতুন্নেছা হল: ৮০৩ জন ভোটারের বিপরীতে ভোট পড়েছে ৪৮৯টি।
বীরপ্রতীক তারামন বিবি হল: ৯৮৪ জন ভোটারের বিপরীতে ভোট পড়েছে ৫৯৫টি।
এদিন সকাল ৯টায় শুরু হওয়া ভোটগ্রহণ চলে ৫টা পর্যন্ত। তবে অনিয়ম, অস্বচ্ছতা ও পক্ষপাতের অভিযোগ তুলে বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে জাকসু নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেয় জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্যানেল। একই সময়ে ছাত্র ইউনিয়নের (একাংশ) প্যানেল ‘সম্প্রীতির ঐক্য’ নির্বাচন কমিশনের প্রতি অনাস্থা জানায়। বিভিন্ন প্যানেলের প্রার্থীরাও কারচুপি ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগ করেন।
তবে শিক্ষার্থীদের অনেকেই এসব অভিযোগকে রাজনৈতিক দোষারোপ হিসেবে দেখছেন এবং শেষ সময় পর্যন্ত ভোটগ্রহণে অংশ নিয়েছেন।
এবারের জাকসু নির্বাচনে মোট ভোটার ১১ হাজার ৭৪৭ জন। বিভিন্ন পদে মোট ১৭৮ জন প্রার্থী চূড়ান্তভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতার অনুমোদন পেয়েছেন। এর মধ্যে সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে ৯ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ৯ জন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (নারী) পদে ৬ জন এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (পুরুষ) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিবিশ্ববিদ্যালয়ের ২১টি হলের ২২৪টি বুথে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে ১০টি ছাত্রী হল ও ১১টি ছাত্র হল। প্রতিটি কেন্দ্রে একজন রিটার্নিং কর্মকর্তা, ৬৭ জন পোলিং কর্মকর্তা ও ৬৭ জন সহকারী পোলিং কর্মকর্তা।
উল্লেখ্য, ১৯৭২ সালে জাকসু প্রতিষ্ঠিত হয়। ওই বছরই জাকসুর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম নির্বাচনের সহসভাপতি (ভিপি) নির্বাচিত হন গোলাম মোর্শেদ এবং সাধারণ সম্পাদক (জিএস) নির্বাচিত হন জাসদ ছাত্রলীগ নেতা শাহ বোরহানউদ্দিন রোকন।
এরপর ১৯৭৩, ১৯৭৪, ১৯৮০, ১৯৮১, ১৯৮৯, ১৯৯০, ১৯৯১ ও ১৯৯২ সালে জাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৯২ সালের সর্বশেষ নির্বাচনে ছাত্রদল একচেটিয়াভাবে জয়লাভ করেছিল। তারা জাকসু ও হল সংসদের ১০৭টি পদের মধ্যে ১০৫টি পেয়েছিল।তা করছেন ১০ জন।তে ভোট পড়েছে ৭৫২টি।
Post a Comment