একজন মুসলিম নারী কি স্বামীকে তা'লাক দিতে পারেন! জানুন ইসলামের বিধান ও আইনি দিক

 



একজন মুসলিম নারী কি স্বামীকে তা'লাক দিতে পারেন! জানুন ইসলামের বিধান ও আইনি দিক








 নিজস্ব প্রতিবেদন: ইসলাম ধর্মে ‘তালাক’ মানে হলো বিবাহিত জীবনের বন্ধন ছিন্ন করা। এটি যেমন একটি ধর্মীয় বিধান, তেমনি সামাজিক ও আইনি বিষয়ও। মুসলিম পারিবারিক আইনে একজন পুরুষ নিজ ইচ্ছায়, কোনো শর্ত ছাড়াই স্ত্রীকে তালাক দিতে পারেন। কিন্তু একজন নারীর জন্য বিষয়টি এতটা সহজ নয়। স্বামীকে তালাক দেওয়ার ক্ষেত্রে তাকে নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয়।






একজন মুসলিম স্ত্রী সরাসরি তালাক দিতে পারেন না, যদি না স্বামী আগেই তাঁকে এই অধিকার না দিয়ে থাকেন। এই বিশেষ অনুমতির নাম হলো ‘তালাক-ই-তাওফিজ’। এটি সাধারণত বিবাহের সময় কাবিননামার মাধ্যমে দেওয়া হয়। যদি এই অধিকার দেওয়া না থাকে, তাহলে স্ত্রীকে আদালতের মাধ্যমে বিচ্ছেদ চাইতে হয়।








নারীর আদালতের মাধ্যমে তালাক চাওয়ার কিছু বৈধ কারণ হতে পারে, যেমন:








১. স্বামী ভরণপোষণের দায়িত্ব পালন করছেন না








২. স্বামী শারীরিকভাবে অক্ষম








৩. স্বামী দীর্ঘদিন নিখোঁজ বা অনুপস্থিত








এমন পরিস্থিতিতে আদালত বিবাহ বিচ্ছেদ অনুমোদন করতে পারে। তবে এর জন্য প্রমাণসহ কারণ দেখাতে হয়।








তালাক-ই-তাওফিজ হলো সেই ক্ষমতা, যেখানে স্বামী স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার অধিকার দেন। এই অনুমতি শর্তযুক্ত অথবা শর্তহীন হতে পারে। অনেক সময় ভুল করে অনেকে মনে করেন এটি শুধু শর্তযুক্ত হতে পারে, কিন্তু ইসলামী বিধান অনুযায়ী স্বামী চাইলে এটি পুরোপুরি শর্তহীনভাবেও দিতে পারেন।








বিয়ের সময় কাবিননামার ১৮ নম্বর কলামটিতে উল্লেখ থাকে—স্বামী কি স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার ক্ষমতা দিচ্ছেন কিনা। এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ, কিন্তু অনেক সময় তা ফাঁকা রাখা হয় বা গুরুত্ব না দিয়েই পূরণ করা হয়। এতে করে পরবর্তীকালে নারীরা সমস্যায় পড়েন।








উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, যদি কাবিননামায় লেখা থাকে যে স্বামী ভরণপোষণ না দিলে স্ত্রী তালাক দিতে পারবেন, কিন্তু স্বামী ভরণপোষণ ঠিকমতো দিলেও স্ত্রী যদি অন্যভাবে নির্যাতনের শিকার হন, তাহলে তিনি সরাসরি তালাক দিতে পারবেন না। তখন তাকে আদালতের মাধ্যমে বিচ্ছেদের আবেদন করতে হবে।








তাই বিয়ের সময় নারীদের উচিত কাবিননামার এই অংশটি ভালোভাবে বোঝা এবং স্বার্থ রক্ষার দৃষ্টিকোণ থেকে যথাযথভাবে পূরণ করা। যদি সেখানে বলা থাকে স্ত্রী শর্তহীনভাবে তালাক দিতে পারবেন, তাহলে ভবিষ্যতের অনেক জটিলতা এড়ানো সম্ভব।








তালাক-ই-তাওফিজ নিয়ে সমাজে এখনো অনেক ভুল ধারণা রয়েছে। এই বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন, যাতে একজন মুসলিম নারী নিজের অধিকার সম্পর্কে সঠিকভাবে জানেন এবং প্রয়োজনে তা প্রয়োগ করতে পারেন।

Countdown Timer

Post a Comment

Previous Post Next Post